উৎসবমুখর পরিবেশে বাংলাদেশ দূতাবাস, মানামাতে ‘জাতীয় প্রবাসী দিবস ২০২৩’ উদযাপিত হয়েছে। শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় বাংলাদেশ দূতাবাস প্রাঙ্গণে দিবসটির কর্মসূচি পালন করা হয়।
চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স এ. কে. এম. মহিউদ্দিন কায়েস-এর সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, বাহরাইনে বসবাসরত বাংলাদেশি বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারিসহ সর্বস্তরের প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
দিবসটি উপলক্ষে দূতাবাস প্রাঙ্গণে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। আলোচনা পর্বের শুরুতেই পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত ও রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী কর্তৃক বাণী পাঠ করা হয়।
চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স এ. কে. এম. মহিউদ্দিন কায়েস তাঁর বক্তব্যের শুরুতে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন স্বাধীনতার মহান স্থপতি ও হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
তিনি আরো স্মরণ করেন ত্রিশ লাখ শহিদ, সম্ভ্রমহারা দুই লাখ মা-বোন এবং জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের। তিনি বলেন, প্রবাসীরা বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। বাংলাদেশের বিকাশমান অর্থনীতিতে প্রবাসীদের ভূমিকা অপরিসীম। দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘প্রবাসীর কল্যাণ, মর্যদা-আমাদের অঙ্গীকার; স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ায় তারাও সমান অংশীদার’ যথার্থ ও সময়োপযোগী হয়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ। আমাদের দেশকে স্মার্ট দেশ হিসেবে পরিনত করতে প্রয়োজন স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার ও স্মার্ট সমাজের। আপনারা যারা প্রবাসে রয়েছেন তারাও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন।
বর্তমান সরকার প্রবাসীদের অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ৩০ ডিসেম্বরকে ‘জাতীয় প্রবাসী দিবস’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে, যা এখন থেকে প্রতিবছর পালিত হবে।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর অনুসৃত পথ ধরে, তাঁর সার্থক উত্তরসূরী ও সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব অগ্রগতি অর্জন করেছে। আপনারা যারা প্রবাসে বসবাস করছেন তারা বৈধ পথে রেমিটেন্স প্রেরণ করে বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকাকে আরো সচল রাখবেন। পাশাপাশি সর্বজনীন পেনশন স্কিমের অধীন প্রবাস স্কিমে আপনারা নিবন্ধন করবেন। এছাড়া, তিনি প্রবাসে বসবাসরত বাংলাদেশিদেরকে দল ও মতের বিভেদ ভূলে একযোগে জাতির পিতার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ প্রধানমন্ত্রীর ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে কাজ করার জন্য উদাত্ত আহবান জানান।
পরিশেষে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তাঁর পরিবারের যারা শাহাদাত বরণ করেছেন এবং বাঙালির স্বাধীনতা ও স্বাধিকার আন্দোলনের সকল পর্যায়ে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনকারী সকল শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ বিদেশের মাটিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
উল্লেখ্য, উক্ত অনুষ্ঠানে চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স এ. কে. এম. মহিউদ্দিন কায়েস সর্বজনীন পেনশন স্কিমের অধীন প্রবাস স্কিমে ইতিমধ্যে যারা নিবন্ধন করেছেন, এরকম ১৯ জন প্রবাসীকে সম্মাননা পুরস্কার প্রদান করেন। এছাড়াও ২ জন গরীব প্রবাসীকে বিনামূল্যে চিকিৎসার জন্য বিশেষ মেডিকেল কার্ড প্রদান করা হয়। এ বছর জাতীয় প্রবাসী দিবস উপলক্ষে দূতাবাসে বাহরাইনে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিশেষ সেবা হিসেবে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, আইনগত সেবা, পাসপোর্ট ও জন্মনিবন্ধন সেবা এবং বিশেষ কনস্যুলার সেবার আয়োজন করা হয়। জাতীয় প্রবাসী দিবসের অনুষ্ঠানমালায় বাহরাইনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ, কর্মচারীগণ, বিভিন্ন সংঘটনের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিকবৃন্দ এবং প্রবাসী বাংলাদেশিরা বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় যোগ দেন।