নতুন আতঙ্কের নাম হয়ে উঠেছে ‘মাঙ্কিপক্স’। বিরল এই ভাইরাস সম্পর্কে খুব একটা স্পষ্ট ধারণা ছিল না বিশ্ববাসীর। কারণ এই ভাইরাসটি মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে দেখা যেত। কিন্তু সম্প্রতি ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডাসহ বেশ কিছু দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে চিন্তায় পড়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও।
তবে, যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস বলছে, এই ভাইরাসে আক্রান্ত বেশিরভাগ মানুষ কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠেন।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ২০১৮ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে যুক্তরাজ্যে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত সাতজন নিয়ে গবেষণা চালানো হয়। গবেষণার সমীক্ষা সম্প্রতি ল্যানসেট পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়। এই গবেষণা অনুযায়ী, এমন কিছু ‘অ্যান্টিভাইরাল’ ওষুধ আছে যা প্রয়োগ করলে মাঙ্কিপক্সের উপসর্গগুলিকে প্রশমিত করা সম্ভব। শুধু তাই নয়, এই সব ওষুধের প্রয়োগ করে রোগীরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেছেন— এমনই দাবি গবেষকদের। এ ক্ষেত্রে রোগীদের উপর দুটি ভিন্ন অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ— ব্রিনসিডোফোভির এবং টেকোভিরিমাট প্রয়োগ করেই আশানুরূপ ফলাফল পেয়েছেন গবেষকরা।
মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ ঠেকাতে গবেষকরা ব্রিনসিডোফোভির নামক ওষুধটির কার্যকারিতা সম্পর্কে অনেকটা নিশ্চিত হলেও টেকোভিরিমাটের বিষয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন আছে বলে মনে করছেন। গবেষকরা আরও জানিয়েছেন, রক্ত এবং লালারসের নমুনা পরীক্ষা করলেই শরীরে মাঙ্কি পক্সের উপস্থিতি টের পাওয়া সম্ভব।
এই ভাইরাসে আক্রান্তদের শরীরে প্রাথমিক উপসর্গের মধ্যে রয়েছে জ্বর, মাথাব্যথা, ফুসকুড়ি, র্যাশ। মুখ থেকে শুরু হয়ে শরীরের বাকি অংশে ছড়িয়ে পড়বে এই র্যাশ। তবে, সহজে মানুষের মধ্যে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা খুবই বিরল।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, আক্রান্ত ব্যক্তির কাছাকাছি থাকলে বেড়ে যেতে পারে সংক্রমণের আশঙ্কা। শ্বাসনালি, ক্ষত স্থান, নাক, মুখ কিংবা চোখের মাধ্যমে এই ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে সুস্থ ব্যক্তির দেহেও। যৌন মিলনের মাধ্যমেও এই রোগ ছড়িয়ে পড়ে।
মাঙ্কিপক্সের কোনো নির্দিষ্ট ভ্যাকসিন নেই, তবে বেশ কয়েকটি দেশ বলেছে যে তারা গুটিবসন্তের ভ্যাকসিন মজুদ করছে, যা সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রায় ৮৫% কার্যকর। কারণ দুটি ভাইরাস প্রায় একই রকম।
আমেরিকার একদল বিশেষজ্ঞের মতে, স্মল পক্সের টিকার মাধ্যমেও এই রোগের সংক্রমণ ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব।