মসজিদের সমীক্ষা ঘিরে ভারতে সংঘর্ষ, নিহত ৩

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

মসজিদের সমীক্ষা ঘিরে ভারতে সংঘর্ষ

মসজিদের সমীক্ষা ঘিরে ভারতে সংঘর্ষ

ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি মসজিদে সমীক্ষার সময় পুলিশ ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন ৩০ জনেরও বেশি পুলিশ সদস্য।

রোববার (২৪ নভেম্বর) উত্তর প্রদেশের সাম্ভাল নামক এলাকায় মুঘল আমলের জামা মসজিদে এ ঘটনা ঘটে। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্ভালে অবস্থিত শাহি জামা মসজিদ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একটি অংশের দাবি, এখানে আগে মন্দির ছিল। সেটি ভেঙে মসজিদ বানিয়েছিল মুঘলরা। এ নিয়ে এক আবেদনের প্রেক্ষিতে সমীক্ষার আদেশ দেন আদালত।

সেই আদেশ নিয়েই রোববার সমীক্ষা করতে গিয়েছিল একটি সরকারি প্রতিনিধি দল। আদালতের নির্দেশে এই সমীক্ষা শুরু হলেও, স্থানীয়দের একাংশ এর প্রতিবাদ জানায়। ওই সময় পুলিশ এসে তাদের থামাতে চাইলে সংঘর্ষ বাধে। কয়েকশমানুষ পুলিশের ওপর হামলা করে বলে দাবি করেছে প্রশাসন।

বিজ্ঞাপন

পুলিশের বরাতে এনডিটিভি বলছে, শাহি জামা মসজিদে সমীক্ষার জন্য দলটি এলে স্থানীয় কয়েকশমানুষ তাদের বাধা দেয়। এতে তাদের সঙ্গে সংঘাত শুরু হয়। পরিস্থিতি সহিংস হওয়ার আগেই সেখানে উপস্থিত হয় পুলিশ। কিন্তু জনতা পুলিশ ও প্রতিনিধিদলের দিকে পাথর ছুড়তে থাকে। পরে পুলিশ টিয়ার শেল নিক্ষেপ করলে জনতা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

মোরাদাবাদের বিভাগীয় কমিশনার অঞ্জনেয়া কুমার সিংকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা পিটিআই বলেছে, নাঈম, বিলাল এবং নওমান নামে তিনজন নিহত হয়েছে। পুলিশ সুপারের বন্দুকধারীসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন।

জানা যায়, পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রথমে আলোচনার চেষ্টা করে। কিন্তু পাথর নিক্ষেপ শুরু করলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানোর মতো পদক্ষেপ নিতে হয়।

এর আগে স্থানীয় এক ব্যক্তি আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন, শাহী জামা মসজিদের জায়গাটিতে আগে একটি মন্দির ছিল। এই অভিযোগের ভিত্তিতে আদালত সমীক্ষার নির্দেশ দেন। তবে স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যরা এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন এবং সমীক্ষার বিরোধিতা করেছেন।

বিক্ষোভে অংশ নেয়া ব্যক্তিরা অভিযোগ করেন, এই সমীক্ষা তাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে এবং এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমাদের ধর্মীয় স্থানের সম্মান রক্ষা করাই আমাদের লক্ষ্য। এটি আমাদের আত্মসম্মানের প্রশ্ন।

জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সমীক্ষা চালানো হচ্ছে এবং এর সঙ্গে কোনো পক্ষপাতিত্ব নেই। প্রশাসনের তরফে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানানো হয়েছে। তবে পরিস্থিতি এখনও উত্তপ্ত রয়েছে এবং এলাকাজুড়ে পুলিশি প্রহরা জারি করা হয়েছে।