বিশ্বের ৮২টি দেশের অন্তত ৩৪ কোটি ৫০ লাখ মানুষ তীব্র খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার ভুগছে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগের প্রধান ডেভিড বিসলি।
শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে তিনি আরও বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আরও দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে এই সংখ্যার সঙ্গে আরও ৭০ কোটি মানুষ যুক্ত হবেন।
জাতিসংঘের খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগের প্রধান বলেন, করোনা মহামারির শুরুর পর্যায়ে বিশ্বজুড়ে যতসংখ্যক মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিল, মহামারির আড়াই বছরে এই সংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি।
তিনি বলেন, এটা অবিশ্বাস্যভাবে উদ্বেগজনক যে ৪৫টি দেশের ৫০ লাখ মানুষ তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে এবং দেশগুলোতে দুর্ভিক্ষ দরজায় কড়া নাড়ছে।
বিসলি বলেন, মহামারির আগ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ক্ষুধার যে ঢেউ ছিল, মহামারির প্রভাবে তা সুনামিতে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে খাদ্যপণ্যের মূল্য যে হারে বাড়ছে, তা অব্যাহত থাকলে আগামী ২০২৩ সালে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে খাদ্য সংকট শুরু হবে। ফলে শিগগিরই বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ শুরু হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা কার্যক্রমের শীর্ষ কর্মকর্তা মার্টিন গ্রিফিথ বলেন, ইথিওপিয়া, উত্তর-পূর্ব নাইজেরিয়া, দক্ষিণ সুদান, ইয়েমেন, সোমালিয়া, আফগানিস্তানসহ এশিয়া ও আফ্রিকার বেশ কিছু দরিদ্র দেশে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ইতিমধ্যেই মানবিক বিপর্যয় পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে।
গ্রিফিথ বলেন, ইতিমধ্যে সোমালিয়ায় দুর্ভিক্ষ শুরু হয়ে গেছে। আপনার ভাববেন শুধু সোমালিয়ায় একমাত্র দেশ, অন্যান্য দেশে দুর্ভিক্ষ শুরু না হলেও অবস্থা বিপৎসংকুল। সেসব দেশে লাখ লাখ মানুষ একবেলাও ঠিকমতো খেতে পারছে না, বলেন জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিভাগের প্রধান।
সংকটে থাকা বিভিন্ন দেশের পরিসংখ্যান তুলে ধরে গ্রিফিথ আরও বলেন, ইয়েমেনে গুরুতর খাদ্যাভাবে ভুগছে অন্তত ১ লাখ ৬০ হাজার মানুষ এবং দেশটির অন্তত ৫ লাখ ৩৮ হাজার শিশু মারাত্মকভাবে অপুষ্টিতে ভুগছে। দক্ষিণ সুদানে বর্তমানে ৬০ শতাংশ মানুষের হাতে পুষ্টিকর খাদ্য কেনার সামর্থ্য নেই। ইথিওপিয়ায় এক কোটি ৩০ লাখ। নাইজেরিয়ায় দুই বেলা খাবারের নিশ্চয়তা নেই- এমন মানুষের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ।