লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার ভোটে খুব অল্প ব্যবধানে জইর বলসোনারোকে হারিয়ে শেষ হাসি হাসলেন ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট বামপন্থী প্রার্থী লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা।
দেশটির নির্বাচন কর্তৃপক্ষের বরাতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, রোববার (৩০ অক্টোবর) দ্বিতীয় ধাপের ভোট গণনা শেষে লুলা দা সিলভা পেয়েছেন ৫০ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট আর ৪৯ দশমিক ২ শতাংশ ভোট পেয়েছেন বলসোনারো।
এর আগে, গত ২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত প্রথম দফার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লুলা ৪৮ শতাংশ ও বলসোনারো ৪৩ শতাংশ ভোট পান। নিয়ম অনুযায়ী কোনো প্রার্থীই ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পাওয়ায় দ্বিতীয় ধাপে ভোট দেন দেশটির ভোটাররা।
বিবিসির খবরে বলা হয়, বলসোনারো ভোট গণনার প্রথম রাউন্ডে এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু লুলা শেষ রাউন্ডে বলসোনারোকে ছাপিয়ে যান। ৯০ শতাংশের বেশি ভোট গণনা পর্যন্ত ব্যবধান ধরে রাখেন লুলা। ইতিমধ্যে বলসোনারোর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা কমে আসতে দেখা গেছে। এরপর ধীরে আরও ব্যবধান বাড়িয়ে নেন লুলা।
ইতিমধ্যে লুলার সমর্থকেরা সাও পাওলো শহরের কেন্দ্রস্থলে গাড়ির হর্ন বাজিয়ে আনন্দ উল্লাস শুরু করে দিয়েছে। রিও ডি জেনিরোর ইপানেমা আশেপাশের রাস্তায় লোকজনকে চিৎকার করতে শোনা গেছে।
লুলার সমর্থক অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী লুইজ কার্লোস গোমেস বলেন, তিনি (লুলা) দরিদ্রদের জন্য সেরা, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের জন্য।
নির্বাচনে জয় পাওয়ার পরপরই লুলা দা সিলভাকে অভিনন্দন জানিয়ে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ টুইটারে এক পোস্টে লিখেছেন, দুই নেতা দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক নতুন করে ঠিক করবেন।
নির্বাচনে ফল ঘোষণার পরপরই এক বিবৃতিতে লুলাকে অভিনন্দন জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হয়েছে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো টুইটারে এক পোস্টে লুলা দা সিলভাকে অভিনন্দন জানিয়ে নির্বাচনের পরিবেশের কথা তুলে ধরেন।
৬৭ বছর বয়সী বলসোনারো পরাজয় স্বীকার করবেন কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়।
তবে, নতুন প্রেসিডেন্ট জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার আগে পরাজিত প্রার্থীর প্রথম বক্তব্য এবং নির্বাচনে পরাজয় স্বীকার করা ব্রাজিলের ঐতিহ্য।
এদিকে সাও পাওলোতে দেওয়া বিজয়ী ভাষণে লুলা বলেন, আমি এখানে আমার সঙ্গে থাকা সমস্ত কমরেডদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। যারা ভোট দিতে গিয়েছিলেন তাদের প্রত্যেকে আমি ধন্যবাদ জানায়। এসময় তিনি বর্ণবাদ, কুসংস্কার এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে নিরলস লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি দেন।