ক্ষমতা গ্রহণের দুই বছর উদযাপন করলো তালেবান

এশিয়া, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 17:25:10

আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতা গ্রহণের দুই বছর উদযাপন করেছে। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) রাজধানী কাবুলে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়।

আল-জাজিরা জানিয়েছে, এক বিবৃতিতে তালেবানের মুখপাত্র জাবিয়ুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ‘কাবুল জয়ের দ্বিতীয় বার্ষিকীতে আমরা আফগানিস্তানের যোদ্ধাদের স্বাগত জানাচ্ছি। তাদের সবাইকে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করতে বলেছি।’

২০২১ সালের ১৫ আগস্ট ক্ষমতাগ্রহণের পর আফগানিস্তানের নিরাপত্তাব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে দাবি করে জাবিয়ুল্লাহ বলেন, ‘এখন সারাদেশে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। সারাদেশ একক নেতৃত্বে এসেছে। প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ইসলামিক ব্যবস্থা।’

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ার ও পেন্টাগনে হামলার অভিযোগে ৭ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্র ও তার ন্যাটো মিত্ররা আফগানিস্তানে সামরিক অভিযান শুরু করে। অল্পদিনের মধ্যে তারা তালেবানকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সক্ষম হয়। কিন্তু, তালেবান গেরিলা যুদ্ধ শুরু করে। ২০ বছরের যুদ্ধ অমীমাংসিত রেখে ২০২১ সালের আগস্টে পশ্চিমারা আফগানিস্তান ত্যাগ করে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো মিত্র সেনাদের নিয়ে ১৫ আগস্ট সর্বশেষ উড়োজাহাজটি কাবুল ত্যাগের আগেই রাজধানী দখলে নেয় তালেবান। তার আগে তারা প্রায় সারাদেশ দখল করে নেয়। ইতোমধ্যে পশ্চিমাদের অনুগত প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি বিশেষ উড়োজাহাজে করে আফগানিস্তান ত্যাগ করেন।

তালেবান নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি করলেও দেশটিতে দুই বছরে অনেকগুলো আত্মঘাতী বোমা হামলা হয়েছে। অধিকাংশ হামলার দায় স্বীকার করেছে স্থানীয় ইসলামিক স্টেট (আইএস)। আইএসের সঙ্গে তালেবানের চরম বিরোধ রয়েছে।

জাতিসংঘের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন অনুসারে, তালেবান ক্ষমতাগ্রহণের পর থেকে নারীদের অবস্থা ক্রমশ খারাপ হয়েছে। দেশটিতে এখন ১২ বছরের বেশি বয়সি নারীরা পড়াশোনা করতে পারে না। নারীদের প্রায় সব সরকারি চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এনজিওতেও তাদের কাজ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নারীদের একা চলাফেরায় আরোপ করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা।

ক্ষমতায় আসার দুই বছর পার হয়ে গেলেও তালেবান এখনও বিশ্বের কোনও দেশের স্বীকৃতি পায়নি।

তবে যুক্তরাষ্ট্রসহ চীন, রাশিয়া, কাতার, ইরান, ভারত প্রভৃতি দেশ অনানুষ্ঠানিকভাবে তালেবানের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে। অধিকাংশ দেশের দাবি, স্বীকৃতির জন্য তালেবানকে নারী অধিকার স্বীকার করতে হবে।

তালেবানের হাতে নারী অধিকার চরম লঙ্ঘিত হওয়া, বাকস্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কোণঠাসা অবস্থায় থাকলেও দুর্নীতি কিছুটা কমেছে। তাছাড়া আফিম চাষও কমছে।

তবে দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থা বেশ নাজুক। বলতে গেলে তেমন কোনও বিদেশি বিনিয়োগ নেই। ফলে কর্মসংস্থানের ব্যাপক সংকট। দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ বিদেশি সহায়তার ওপর নির্ভরশীল।

এ সম্পর্কিত আরও খবর