পাকিস্তানে প্রতি দুই ঘণ্টায় এক শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার

এশিয়া, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 23:50:43

পাকিস্তানে ২০২৩ সালে প্রতি দুই ঘণ্টায় এক শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে একটি বেসরকারি সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

আল-জাজিরা জানিয়েছে, ইসলামাবাদভিত্তিক এনজিও সাহিল তাদের বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) প্রকাশিত অর্ধবার্ষিক প্রতিবেদনে বলেছে, এই বছরের জানুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে মোট ২,২২৭ শিশুর যৌন নির্যাতনের ঘটনা কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট করা হয়েছে।

সংবাদপত্রের প্রতিবেদনের পাশাপাশি সরাসরি তাদের কাছে রিপোর্ট করা মামলাগুলো থেকে ডেটা সংকলন করে এনজিওটি ওই প্রতিবেদন তৈরি করেছে। এনজিওটি বলেছে, ২০২৩ সালে রেকর্ড করা মামলাগুলোর মধ্যে যৌন নির্যাতনের শিকার মেয়ে শিশুর সংখ্যা ১,২০৭ এবং ছেলে শিশুর সংখ্যা ১,০২০ জন।

সাহিলের জাতীয় আইনি সহায়তা সমন্বয়কারী ইমতিয়াজ আহমেদ সুমরাহ আল-জাজিরাকে বলেছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নির্যাতনের শিকার শিশুদের বয়স ছয় থেকে ১৫।

এনজিওটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছর তাদের রেকর্ড করা ২,২০০ শিশুকে নির্যাতনে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা শিশুটির পরিচিত।

সাহিল প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, শিশু নির্যাতনের মামলাগুলোর সবচেয়ে বেশি প্রায় ৭৫ শতাংশ রেকর্ড করা হয়েছে জনবহুল প্রদেশ পাঞ্জাবে।

দক্ষিণ সিন্ধু প্রদেশে ৩১৪টি মামলা এবং রাজধানী ইসলামাবাদে ২০২৩ সালের প্রথম ছয় মাসে শিশু যৌন নির্যাতনের ১৬১টি ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে।

এদিকে, বেলুচিস্তানে মাত্র ২৪টি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। দুর্বল বিচার ব্যবস্থা এবং আদালতের বাইরে বিষয়টির সামাজিক নিষ্পত্তির প্রবণতা শিশুদের যৌন নির্যাতনের ক্ষেত্রে অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করার ক্ষেত্রে বাধা হিসাবে উল্লেখ করেছেন সুমরাহ।

সুমরাহ আরও বলেন, ‘আমাদের আইনি ব্যবস্থা এই জঘন্য অপরাধগুলোকে বছরের পর বছর ধরে চলতে দেয়। শিশুদের যৌন নির্যাতনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার হার ২ শতাংশও নয় এবং এই মামলাগুলোর বেশিরভাগই দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হয়।’

পাকিস্তানের মানবাধিকার মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মুহাম্মদ আরিফ লেঘারি আল-জাজিরাকে বলেন, সরকার শিশুদের যৌন নির্যাতন থেকে রক্ষা করার জন্য আরও ভাল ব্যবস্থা তৈরি করছে।

তিনি বলেন, ‘মানুষ অভিযোগ করে আমাদের আইনি ব্যবস্থা ধীর। কিন্তু এটা বুঝতে হবে যে, আমাদের সাংবিধানিক ও বিচারিক বাধ্যবাধকতা পূরণ করতে হবে। আদালতগুলোকে বিশদভাবে প্রক্রিয়াটির মধ্য দিয়ে যেতে হবে, যেখানে তারা উভয় পক্ষের যুক্তি শোনে এবং প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন করে। এর জন্য সময় দিতে হবে। যাতে কেউ দাবি করতে না পারে যে আইনের অপব্যবহার হয়েছে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর