চাঁদে চন্দ্রযান-৩-এর অবতরণস্থলের নাম রাখা হয়েছে ‘শিবশক্তি।’ শনিবার (২৬ আগস্ট) সকালে গ্রিস থেকে ফিরেই ইসরোর দফতরে পৌঁছান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানেই এই ঘোষণা দেন তিনি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, ২০১৯ সালে চন্দ্রযান-২ চাঁদের যে জায়গায় ভেঙে পড়েছিল, সে জায়গারও নামকরণ করেন তিনি। ওই জায়গার নাম দিয়েছেন তিনি ‘তেরঙা।’
তৃতীয় চন্দ্রযানের সাফল্যের জন্য ২৩ অগস্ট দিনটিকে ‘জাতীয় মহাকাশ দিবস’ হিসাবেও ঘোষণা করেছেন মোদি।
শনিবার বেঙ্গালুরু পৌঁছেই মোদীকে গাইতে শোনা গেল বিজ্ঞানের জয়গান। ইসরোর চন্দ্র অভিযান সফল হওয়ায় উচ্ছ্বসিত মোদি বিমানবন্দরে নেমেই বলেন, ‘জয় বিজ্ঞান, জয় অনুসন্ধান।’
এরপর জনগণের উদ্দেশে স্বল্পসময় ভাষণ দেন মোদি। সেখানেও তার মুখে বিজ্ঞান এবং বিজ্ঞানীদের স্তুতি শোনা গেল। এরপরই ইসরোর উদ্দেশে রওনা দেন প্রধানমন্ত্রী।
ইসরো পৌঁছে চন্দ্রযানের সাফল্যকাহিনী নিয়ে বিজ্ঞানীদের সঙ্গে কথা বলার সময় আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন মোদি। চোখে জল চলে আসে তার। এমনকি, কথা বলতে বলতে কয়েক বার কান্নায় গলা ভেঙে যায়।
ইসরোর বিজ্ঞানীদের অভিনন্দন জানিয়ে মোদী বলেন, ‘ইসরোর বিজ্ঞানীদের ধৈর্য, পরিশ্রম দেশকে যে উচ্চতায় নিয়ে গেছে, তা সাধারণ বিষয় নয়। ভারতীয় বিজ্ঞানের অগ্রগতির শঙ্খনাদ শোনা যাচ্ছে।’
চন্দ্রযানের সাফল্যে আবেগতাড়িত প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত চাঁদে পৌঁছে গেছে। ইসরো আমাদের দেশকে গর্বিত করেছে। আমরা চাঁদের যে জায়গায় পৌঁছেছি, সেখানে আগে কেউ পৌঁছয়নি। সারা বিশ্ব ভারতীয় প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞানের প্রশংসা করছে। চন্দ্রযান-৩ ভারতের না, মানবতার সাফল্য। এই অভিযান দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নতুন রাস্তা খুলে দেবে। পৃথিবীর সমস্যা সমাধানের কাজও করবে। আমি ইসরোর সব বিজ্ঞানী, কৌশলী এবং তৃতীয় চন্দ্রযানে সঙ্গে যুক্ত সকলকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।’
দুই দেশ সফর শেষে শনিবার দেশে ফিরেছেন মোদি। ইসরোর বিজ্ঞানীদের সঙ্গে দেখা করবেন বলে গ্রিস থেকে সরাসরি বেঙ্গালুরু নামেন তিনি। বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরের বাইরে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। এরপর তৃতীয় চন্দ্রযানের সাফল্যের নেপথ্যে থাকা ইসরো বিজ্ঞানীদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করবেন বলে ইসরোর কার্যালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হন।
বেঙ্গালুরুতে অবতরণের পরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ পোস্ট করে প্রধানমন্ত্রী ইসরো বিজ্ঞানীদের সঙ্গে দেখা করার কথা জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘বেঙ্গালুরুতে অবতরণ করেছি। আমি ইসরো সেই সব বিজ্ঞানীদের সঙ্গে দেখা করার জন্য মুখিয়ে রয়েছি যারা চন্দ্রযান-৩ অভিযানকে সফল করে ভারতকে গর্বিত করেছেন।’
কিন্তু, প্রধানমন্ত্রী মোদিকে স্বাগত জানানোর জন্য বিমানবন্দরে দেখা যায়নি কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া এবং উপমুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমারকে। কংগ্রেসের অভিযোগ, তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তবে বিমানবন্দরের বাইরে বক্তৃতা করার সময় মোদি বলেন, ‘আমি নিজেই মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যপালকে বলেছিলাম, তারা যেন না আসেন। কারণ, আমি বিজ্ঞানীদের সঙ্গে দেখা করার পরে চলে যাব।’