ইতিহাস গড়তে পারেন সাবিরা প্রকাশ। কারণ, সব ঠিকঠাক থাকলে তিনিই হবেন পাকিস্তানের প্রথম নারী, যিনি রক্ষণশীল এলাকা বলে পরিচিত খাইবার পাখতুনখোয়ার বুনের জেলা থেকে নির্বাচনে লড়বেন।
নির্বাচিত হলে তিনি ইতিহাস গড়ে পাকিস্তান ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির সদস্যও হবেন এই হিন্দু তরুণী।
সাবিরা প্রকাশ পেশায় একজন চিকিৎসক বলে জানিয়েছে ইন্ডিয়া টুডে। তার বাবার নাম ওম প্রকাশ। অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক এবং রাজনীতিক তিনি। গত ৩৫ বছর ধরে বেনজির-বিলাবল ভুট্টোর দল পিপিপি’র সক্রিয় কর্মী ওম প্রকাশ।
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন। আর সেই নির্বাচনে লড়তে চেয়ে ওম প্রকাশের কন্যা সাবিরা বুনের জেলার পিকে-২৫ আসনটি থেকে গত ২৩ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে একটি আসনে একই রাজনৈতিক দলের একাধিক নেতা বা নেত্রী মনোনয়ন জমা দিতে পারেন। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব একজনকে চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে বেছে নিলে বাকিরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন।
সাবিরার আশা, দলীয় নেতৃত্ব শেষ পর্যন্ত তাকে চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে টিকিট দেবেন। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম সূত্র জানা গেছে, ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে তিন ধরনের আসন আছে। সাধারণ আসন, নারী ও সংখ্যালঘুদের (হিন্দু, খ্রিস্টান, পার্সি, শিখ) জন্য সংরক্ষিত আসন।
যে দল যতগুলো সাধারণ আসন দখল করবে, তার ভিত্তিতে সংরক্ষিত আসন পাবে। সংরক্ষিত আসনে তারা পছন্দসই প্রার্থীকে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে পাঠাতে পারে। সাবিরা এক সাক্ষাৎকারে জানান, বর্ষীয়ান নেতারা তার বাবাকে বলেছেন, তিনি যেন কোনও সাধারণ আসন থেকে লড়েন।
কিন্তু সূত্রের মতে, রক্ষণশীল এলাকার ওই আসনটিতে শেষ পর্যন্ত অন্য কোনও জোরদার প্রার্থীকে জিতিয়ে এনে সংরক্ষিত আসনে সাবিরাকে আইনসভায় পাঠাতে পারে পিপিপি।
স্থানীয় সমাজকর্মী ইমরান নোশাদ খান জানিয়েছেন, গত ৫৫ বছরে বুনের জেলা থেকে কোনও নারী নির্বাচনে দাঁড়াননি। এক্ষেত্রে সাবিরাই প্রথম। হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও যে পিকে-২৫ আসনটিতে তিনি মনোনয়ন জমা দিয়েছেন, সেটি সম্পূর্ণ মুসলিম-অধ্যুষিত এলাকার।
সাবিরা জানান, তিনি তার বাবার পথেই হাঁটছেন। মানবতার সেবা করাটা তার রক্তে। ২০২২ সালে অ্যাবটাবাদ ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ থেকে ডাক্তারি পাশ করেন তিনি। তবে রাজনীতিতে সাবিরা নেহাতই আনকোরা নন। তিনি বুনের জেলায় পিপিপি’র মহিলা সংগঠনের সাধারণ সম্পাদিকা।