যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় শক্তিশালী ঝড় ও ভারী বৃষ্টিপাতের পর বন্যা ও ভূমিধসের সৃষ্টি হয়েছে। বিপর্যয়কর এই আবহাওয়ায় মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানেই অন্তত ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় এখনও উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
ঝড়-বৃষ্টির কারণে ক্যালিফোর্নিয়া ও আশপাশের এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়া এবং অ্যারিজোনার প্রায় ৩৮ মিলিয়ন মানুষ বন্যা সতর্কতার অধীনে রয়েছেন বলে জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঝড়ের মধ্যে গাছ পড়ে তিনজন লোক মারা গেছেন বলে কর্মবর্তারা জানিয়েছেন। এর মধ্যে স্যাক্রামেন্টো উপত্যকায় এক ব্যক্তি গাছ চাপায় নিহত হন। অন্যদিকে সান্তা ক্রুজ কাউন্টিতে বাড়ির ওপর গাছ আছড়ে পড়ার পর আরেকজন মারা যান। এরই মধ্যে অঙ্গরাজ্যটির আটটি কাউন্টিতে জরুরি অবস্থাও ঘোষণা করেছেন গভর্নর।
আকস্মিকভাবে সৃষ্ট ভারী বৃষ্টি, ঝড় ও বন্যার কারণে প্রায় ১ কোটি মানুষের দুর্ভোগ শুরু হয়েছিল রাজ্যটিতে।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সিএনএন জানায়, বন্যার কবলে প্রায় ১ কোটি মানুষ। বেশ কিছু এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছেন প্রায় ৯ লাখ মানুষ। ঝড় শুরু হওয়ার পরপরই থেকে দমকলকর্মীরা ১৩০ টিরও বেশি বন্যা সম্পর্কিত ঘটনায় সাড়া দিয়েছে এবং বেশ কয়েকটি উদ্ধারকাজ পরিচালনাও করেছে।
দুই সপ্তাহের মধ্যে এ নিয়ে দ্বিতীয় বায়ুমণ্ডলীয় নদী ক্যালিফোর্নিয়ায় আঘাত হানল। কর্মকর্তারা লস অ্যাঞ্জেলেসসহ দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার কিছু পাহাড়ি এলাকা থেকে মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার আদেশ জারি করেছেন। এছাড়া মেয়রও জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন।
লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র কারেন বাস সোমবার বলেছেন, ‘নিরাপদে থাকুন এবং রাস্তা থেকে দূরে থাকুন, এটি এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যদি একেবারেই জোরালো কোনও প্রয়োজন হয় তবেই আপনারা বাড়ি ছেড়ে বাইরে চলে যাবেন।’
বিবিসি বলছে, ঝড় ও বৃষ্টির পর ভূমিধস ও ধ্বংসাবশেষ প্রবাহিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গত রোববার ঘরবাড়ির ভেতর দিয়ে কাদার স্রোত প্রবাহিত হওয়ার পর ১৬ জন বাসিন্দাকে তাদের হলিউড পাহাড়ের বাড়ি থেকে বের করে আনা হয়। কাদার স্রোতে ভবনগুলো কার্যত তাদের ভিত্তি থেকে ছিটকে পড়েছিল এবং গ্যাস লাইনও ফেটে গিয়েছিল।
এছাড়া লস অ্যাঞ্জেলেস এবং সান বার্নার্ডিনো কাউন্টিতে বন্যায় আটকে পড়া গাড়ি চালকদের উদ্ধারে কাজে নামতে হয় উদ্ধারকারীদের।
সান বার্নার্ডিনো কাউন্টির দমকল বিভাগের তথ্য অনুসারে, সোমবার ভোরে একজন বাবা, মা এবং মেয়ে তাদের গাড়ি থেকে নামতে এবং ক্রমবর্ধমান বন্যার পানি থেকে বাঁচতে গাছে উঠতে বাধ্য হয়েছিলেন।
এদিকে ঘণ্টায় ৭০ মাইল (১১২ কিলোমিটার) বেগে শক্তিশালী বাতাসের কারণেও বহু বাড়িঘর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়েছে এবং গাছ ভেঙে পড়েছে।