নেতানিয়াহুর পরিকল্পনা কখনো সফল হবে না : হামাস

মধ্যপ্রাচ্য, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম | 2024-02-24 15:50:19

ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) লেবাননের রাজধানী বৈরুতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর গাজা যুদ্ধ পরবর্তী পরিকল্পনা কখনো সফল হবে না।

রয়টার্স জানিয়েছে, ইহুদি রাষ্ট্রের এ নেতার পরিকল্পনার কঠোর নিন্দা করেছেন ওসামা হামদান নামের ওই হামাস কর্মকর্তা।

ওসামা বলেন, ‘নেতানিয়াহু গাজা উপত্যকার ব্যাপারে এমন কিছু পরিকল্পনা উপস্থাপন করছেন, যা কখনো সফল হবে না এবং সেটা খুব ভালভাবেই জানেন তিনি।’

এদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর প্রস্তাব অনুসারে, হামাস পরবর্তী গাজায় একটি বেসামরিক কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করা হবে এবং এই কর্তৃপক্ষ যেকোনো সময় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষাবাহিনীকে গাজায় অভিযান চালানোর অনুমতি দিতে বাধ্য থাকবে। হামাসকে হারানোর পর অঞ্চলটির শাসনব্যবস্থা কেমন হবে তার একটি রূপরেখায় এসব তথ্য উপস্থাপন করেছেন তিনি।

শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভায় তিনি এই প্রস্তাব উত্থাপন করেন বলে ইসরায়েল সরকারের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম জেরুসালেম পোস্ট।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নেতানিয়াহু প্রস্তাবিত পরিকল্পনার নথিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েল সন্ত্রাসবাদের পুনরুত্থান ঠেকাতে ও গাজা থেকে উদ্ভূত ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্য যেকোনো হুমকি নস্যাৎ করার উদ্দেশ্যে যেকোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই পুরো গাজা উপত্যকায় যেকোনো ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালনার স্বাধীনতা ভোগ করবে।’

নথিতে আরও বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলের সীমান্তবর্তী গাজার যেসব স্থানে সুরক্ষিত এলাকা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে তা বজায় থাকবে, যতক্ষণ পর্যন্ত ইসরায়েল সেগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করবে।’ রাফাহ ক্রসিং সম্পর্কে পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, ইসরায়েল এই ক্রসিং হয়ে গাজা উপত্যকায় গোলাবারুদ প্রবেশ রোধে যেকোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।

ইসরায়েল-রাফাহ সীমান্তের বিষয়ে পরিকল্পনায় বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি। ওই নথিতে বলা হয়েছে, গাজা-মিসর সীমান্তে বর্তমানে যে ‘বন্ধ’ অবস্থায় বিদ্যমান তা বজায় থাকবে। হামাস সন্ত্রাসবাদীরা যেন সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র এনে সশস্ত্র হতে না পারে সেজন্য চলমান অভিযান বজায় থাকবে।

নথিতে আরও বলা হয়েছে, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় রাফাহ সীমান্তে ইসরায়েল এই ‘বন্ধ’ অবস্থা বজায় রাখবে। এছাড়াও গাজায় কোনো সামরিক কর্তৃপক্ষের উপস্থিতি থাকবে না।

প্রস্তাবে নেতানিয়াহু আরও বলেছেন, তিনি গাজা উপত্যকায় বেসামরিক ব্যবস্থাপনা ও জনভিত্তির শাসন নিশ্চিত করতে প্রশাসন পরিচালনার অভিজ্ঞতা আছে এমন ব্যক্তি ও সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। তবে যারা সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে এমন দেশ বা সংস্থার সঙ্গে জড়িত নয় কেবল এমন ব্যক্তিদেরই এই দায়িত্ব দেওয়া হবে। এ ছাড়া গাজা উপত্যকার সব ধর্মীয়, শিক্ষামূলক ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসবাদবিরোধী ব্যাপক কর্মসূচি চালানো হবে।

তবে নেতানিয়াহুর প্রস্তাবে আবারও একটি ঐক্যবদ্ধ ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করা হয়েছে। নথিতে বলা হয়েছে, ‘ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে স্থায়ী মীমাংসার বিষয়ে আন্তর্জাতিক নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরায়েল।স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের একতরফা স্বীকৃতির বিরোধিতা অব্যাহত রাখবে ইসরায়েল।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর