ইসরায়েলি গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের কাছে তথ্য বিক্রির অভিযোগে ৭ জনকে আটক করেছে তুরস্কের পুলিশ।
তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলি ইয়ারলিকায়া এক্স-এ বলেছেন, ‘ইস্তাম্বুলে একযোগে অভিযানের সময় মঙ্গলবার (৫ মার্চ) সন্দেহভাজনদের হেফাজতে নেওয়া হয়। তুরস্কে এই ধরনের গ্রেপ্তারের তরঙ্গের মধ্যে এটাই সর্বশেষতম।’
ইয়ারলিকায়া বলেন, ‘আটক ব্যক্তিরা তুরস্কের ব্যক্তি ও কোম্পানির তথ্য সংগ্রহ করে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে বিক্রি করত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অভিযানগুলো যৌথভাবে পরিচালনা করেছে তুরস্কের পুলিশ এবং জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এমআইটি)।’
ইয়ারলিকায়া আরও বলেন, ‘আমরা কখনোই আমাদের দেশের সীমানার মধ্যে গুপ্তচরবৃত্তির তৎপরতা চালাতে দেব না। আমরা একে একে তাদের ধরব এবং বিচারের আওতায় আনবো।’
ইয়ারলিকায়া কর্তৃক প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, পুলিশ ইস্তাম্বুলের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বন্দুক, মাদক এবং ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলো জব্দ করছে।
আটককৃতদের বিরুদ্ধে কোনও চার্জ গঠন করা হয়েছে কিনা, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
ইসরায়েল তাৎক্ষণিকভাবে ওই অভিযানের বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।
তুরস্কে গত মাসে একই অভিযোগের ভিত্তিতে আরও ৭ জনকে এবং জানুয়ারির শুরুতে ৩৪ জনকে আটক করা হয়েছিল।
জানুয়ারিতে গ্রেপ্তার হওয়া সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে তুরস্কে বসবাসকারী বিদেশী নাগরিকদের অনুসরণ, হামলা ও অপহরণসহ নানা অপরাধ সংঘটনের পরিকল্পনা করার অভিযোগ রয়েছে।
সেই সময় দেশটির আইনমন্ত্রী ইলমাজ টুঙ্ক বলেছিলেন, বেশিরভাগ সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি গোয়েন্দাদের পক্ষে রাজনৈতিক বা সামরিক গুপ্তচরবৃত্তি করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
তুরস্কের রাষ্ট্র পরিচালিত আনাদোলু এজেন্সি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, মঙ্গলবার আটককৃতদের মধ্যে একজন সাবেক বেসামরিক কর্মচারী রয়েছেন, যিনি বর্তমানে একজন প্রাইভেট গোয়েন্দা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি সার্বিয়ার বেলগ্রেডে মোসাদ দ্বারা প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
তিনি মধ্যপ্রাচ্যের কোম্পানি ও ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহ করেছেন এবং ইসরায়েলি গোয়েন্দাদের দ্বারা লক্ষ্যবস্তু লোকদের গাড়িতে ট্র্যাকিং ডিভাইস স্থাপন করেছেন বলে জানা গেছে।
এমআইটি জানিয়েছে, তিনি ক্রিপ্টোকারেন্সিতে পেমেন্ট পেয়েছেন যা অফিসিয়াল রেকর্ডে দেখা যায়নি।
বছরের পর বছর উত্তেজনার পর তুরস্ক এবং ইসরায়েল ২০২২ সালে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে এবং রাষ্ট্রদূতদের পুনরায় নিয়োগ করে।
এরপর ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সম্পর্ক দ্রুত খারাপ হয়ে যায়।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান সতর্ক বলেছেন, ‘তুরস্কের মাটিতে ইসরায়েল যদি কাউকে টার্গেট করে তাহলে গুরুতর পরিণতি হবে।’