ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে হাজির করানো হয়েছে আবগারি নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়া অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে। ইডি সূত্রে জানা গেছে, দিল্লির এই মুখ্যমন্ত্রীকে ১০ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে তারা।
শুক্রবার (২২ মার্চ) মামলাটির শুনানি করবেন বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক কাবেরী বাওয়েজা।
দিল্লির আবগারি মামলায় আম আদমি পার্টির (আপ) প্রধান কেজরিওয়ালকে মোট ৯ বার সমন পাঠিয়েছিল ইডি। কিন্তু ৮ বারই হাজিরা এড়িয়ে যান তিনি। শেষ পাঠানো সমনে বৃহস্পতিবারই ইডি দফতরে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে। কিন্তু হাজিরা না দিয়ে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন কেজরিওয়াল।
এর পর কেজরিওয়ালের বাড়িতে হানা দেয় ইডির কর্মকর্তরা।
এনডিটিভি জানিয়েছে, গ্রেফতারের আগে কেজরিওয়ালের নিজ বাড়িতেই তাকে আবগারি নীতি সংক্রান্ত মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি।
দিল্লি হাইকোর্ট আবগারি মামলায় কেজরিওয়ালকে রক্ষার বিষয়টি প্রত্যাহার করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইডির একটি দল তার বাড়িতে পৌঁছায় বলে জানা গেছে।
সূত্রের খবর, ১২ জনের ইডি কর্মকর্তাদের একটি দল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে যান। তল্লাশি অভিযানের জন্য প্রয়োজনীয় নথি দেখিয়েই কেজরিওয়ালের বাড়িতে প্রবেশ করে তারা। তার বাড়ির সামনে মোতায়েন করা হয় দিল্লি পুলিশ। নিরাপত্তাও আঁটসাঁট করা হয়।
আদালতে পেশ করা আবেদনে কেজরিওয়াল বলেন, ‘ইডিকে নিশ্চয়তা দিতে হবে যে, তাদের তলবে সাড়া দিলে আমার বিরুদ্ধে কোনও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে না।’
আপের অভিযোগ হলো, ইডির লক্ষ্য জিজ্ঞাসাবাদ নয়। এতদিন ধরেও তারা এই মামলায় কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে কোনও তথ্য-প্রমাণ পায়নি। তাই লোকসভা নির্বাচনের আগে সমন পাঠিয়ে তাকে গ্রেফতার করার চেষ্টা করছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি সুরেশকুমার কাইথ এবং বিচারপতি মনোজ জৈনের ডিভিশন বেঞ্চে কেজরিওয়ালের আবেদন সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল।
শুনানি শেষে ডিভিশন বেঞ্চ বলেন, ‘আমরা উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনেছি। তবে আমরা এই পর্যায়ে মামলাকারীকে কোনও সুরক্ষা দেওয়ার কথা দিচ্ছি না।’
এই রায়ের পরেই তৎপর হয় ইডি। যদিও এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তল্লাশি অভিযান নিয়ে আপের পক্ষ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, আবগারি মামলায় বিআরএস নেত্রী কে কবিতাকে কয়েক দিন আগেই গ্রেফতার করেছে ইডি। বর্তমানে আদালতের নির্দেশে ইডি হেফাজতে রয়েছেন তিনি। কবিতা ছাড়াও এই মামলায় এখনও পর্যন্ত আপের দুই প্রবীণ নেতা সিসৌদিয়া এবং আপের রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় সিং গ্রেফতার হয়েছেন।
এর আগে অভিযোগ ওঠে যে, দিল্লি সরকারের ২০২১-২২ সালের আবগারি নীতি বেশ কিছু মদ ব্যবসায়ীকে সুবিধা করে দিয়েছিল। এই নীতি প্রণয়নের জন্য যারা ঘুষ দিয়েছিলেন, তাদের সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। আপ সরকার সেই অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেছে।