মজুরি কম বলে নিজ দেশের চাকরির বাজার থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে লাওসের তরুণরা। ফলে দেশটি ভয়াবহ শ্রমিক ঘাটতিতে পড়েছে। প্রতিবেশি এবং পশ্চিমের দেশগুলোতে চাকরিকে প্রাধান্য দিচ্ছে দেশটির নতুন প্রজন্ম। এমতাবস্থায় দেশের কর্মশক্তি ধরে রাখতে লাওসের মধ্যেই কর্মসংস্থানের সুযোগ বিবেচনা করার জন্য নাগরিকদের প্রতি জরুরি আবেদন জানিয়েছে দেশটির শ্রম ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়।
স্থানীয়রা বলছেন, লাওসে ন্যূনতম মজুরি এবং জীবনযাত্রার ব্যয়ের মধ্যে ব্যবধান অনেক বেশি। ফলে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে লাওসের নাগরিকরা বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ খুঁজছে। থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া এবং জাপানের মতো দেশগুলো লাও অভিবাসী কর্মীদের পছন্দের গন্তব্য। ফলে দেশটিতে নিজেদের কাজ করার জন্য শ্রমিকের সংকট দেখা দিয়েছে।
সম্প্রতি লাওসের শ্রম ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, লাওসের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনার জন্য কর্মীদের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তাই এখন জরুরি প্রয়োজনে নাগরিকদের নিজ দেশে চাকরি করতে যেন আবেদন জানানো হয়।
মন্ত্রণালয় স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে লাওসের গ্রামগুলো থেকে বিদেশে কর্মরত, বেকার এবং চাকরি প্রার্থীদের তথ্য সংগ্রহের নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়াও বেকারত্ব মোকাবিলায় এবং কর্মীদের চাহিদা সম্পর্কে জানতেও জরিপ চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শ্রম ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় তরুণ চাকরিপ্রার্থীদের দেশটির প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিগুলোতে চাকরির জন্য আবেদন করার অনুরোধ জানিয়েছে। এছাড়াও একটি কেন্দ্রীয় ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তাদের চাকরির নিশ্চয়তা এবং সুযোগ সুবিধাগুলো যাচাইয়ের আবেদন জানিয়েছে।
অভ্যন্তরীণভাবে শ্রমিকদের ধরে রাখার সকল চেষ্টা সত্ত্বেও লাওসে ক্রমাগত শ্রমিকের ঘাটতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিম্ন মজুরি, মুদ্রাস্ফীতি এবং মুদ্রার অবমূল্যায়নকে এই জন্য প্রধান কারণ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। এরই মধ্যে সরকার ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তবে এক্ষেত্রে কিছু নিয়োগকর্তার মজুরি সমন্বয়ে অনীহা দেখা দিচ্ছে।
শ্রমিক সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে সরকার, সংশ্লিষ্ট সংস্থা এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের জন্য লাও ফেডারেশন অব ট্রেড ইউনিয়ন এবং লাও এমপ্লয়মেন্ট বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনকে দ্বায়িত্ব দিয়েছে। কর্মীদের ক্ষমতায়ন, উন্নত শিল্প অনুশীলন ও নিয়োগকর্তা এবং কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।