কংগ্রেসের নির্বাচনী ইশতেহারকে মিথ্যার ফুলঝুরি বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, ইশতেহারে কংগ্রেসের চিন্তাভাবনাগুলো স্বাধীনতা-উত্তর মুসলিম লীগের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।
শনিবার (৬ এপ্রিল) রাজস্থানের আজমির জেলার এক জনসমাবেশে নরেন্দ্র মোদি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, কংগ্রেসের নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিটি পৃষ্ঠায় ভারতকে ছিন্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে। কংগ্রেস মুসলিম লীগের চিন্তাভাবনা আজকের ভারতের ওপর চাপিয়ে দিতে চায়। তাদের মুখোশ উন্মোচন হয়েছে।
নরেন্দ্র মোদি বলেন, যে কংগ্রেস এককালে স্বাধীনতার লড়াই লড়েছে, তাবড় ব্যক্তিত্বরা কংগ্রেসের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাদের অন্যতম মহাত্মা গান্ধী। কিন্তু আজ সবাই এক কণ্ঠে বলছে, স্বাধীনতার লড়াই করা কংগ্রেস শেষ হয়ে গিয়েছে। মোদি বলেন, এখন যে কংগ্রেস আছে, তার কাছে দেশের উপকারে কোনও নীতিও নেই, রাষ্ট্রনির্মাণের ভাবনা নেই।
সমাবেশে আগত জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনি যদি কংগ্রেসের ইশতেহারটি দেখেন তাহলে দেখবেন তারা ভারতকে গত শতাব্দীতে ঠেলে দিতে চায়... কংগ্রেস কখনই নারী শক্তি নিয়ে মাথা ঘামায়নি। স্বাধীনতার পর নারীরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এটা উচিত হয়নি। ১৯ এপ্রিল আপনাদের ভোটের মাধ্যমে কংগ্রেসকে জবাব দিন।
এদিকে, মোদিকে পাল্টা আক্রমণ করে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেন, তিনি (মোদি) ইতিহাস জানেন না। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রতিষ্ঠাতা বিজেপি মতাদর্শী শ্যামা প্রসাদ মুখার্জি নিজেই ১৯৪০ সালের গোড়ার দিকে মুসলিম লীগের সঙ্গে বাংলায় একটি জোট সরকারের অংশ ছিলেন।
তিনি বলেন, কংগ্রেস কখনোই বিভাজনের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না, যেটা বিজেপি করে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (৫ এপ্রিল) প্রকাশিত দলের নির্বাচনী ইশতেহারে কংগ্রেস বলেছে, স্বাধীনতা-উত্তর ভারতের ‘সর্বনাশের কারণ’ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ১০ বছর ধরে যাকে খাড়া করে আসছেন, ক্ষমতায় এলে পররাষ্ট্রনীতিতে সেই জওহরলাল নেহরুর আদর্শকেই আঁকড়ে ধরবে কংগ্রেস।
বিজেপি সরকারের গত ১০ বছরের পররাষ্ট্রনীতির কঠোর সমালোচনা করে ইশতেহারে কংগ্রেস বলেছে, স্বাধীনতার সময় থেকেই দেশের পররাষ্ট্রনীতি পরিচালিত হয়েছে মতৈক্যের ভিত্তিতে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সহমতের সেই রীতি থেকে বেরিয়ে বিজেপি বহু সময় তার মতো করে নীতি গ্রহণ করেছে। বিশেষ করে তা দেখা গেছে সাম্প্রতিক ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধের ক্ষেত্রে। শান্তিকামী দেশ শান্তির প্রবক্তা হিসেবে বিশ্বে ভারতের যে পরিচয় ছিল, কংগ্রেস তা আবার প্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
কংগ্রেস বলেছে, প্রতিবেশীদের দিকে তারা বিশেষ নজর দেবে। নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে সম্পর্কহানি নিয়ে কংগ্রেস অনেকবার সরব হয়েছে। ইশতেহারে তারা বলেছে, এই দুই দেশের সঙ্গে বিশেষ করে সম্পর্ক দৃঢ় করাই হবে তাদের প্রাথমিক লক্ষ্য। সেই সম্পর্ক তৈরি করা হবে পারস্পরিক মঙ্গলের কথা ভেবেই।
ইশতেহারে বাংলাদেশ প্রসঙ্গও লিখেছে কংগ্রেস। যেমন উল্লেখ করেছে মালদ্বীপের কথাও। মালদ্বীপের আদলে বাংলাদেশে সম্প্রতি ‘ইন্ডিয়া আউট’ স্লোগান শোনা যাচ্ছে। ভারতীয় পণ্য বর্জনের প্রচার চালানো হচ্ছে। এই দুই বন্ধুদেশে ভারত-বিরোধিতা কংগ্রেসকে চিন্তায় রেখেছে।