থাইল্যান্ডের রাজতন্ত্র ব্যবস্থার সংস্কারের বিষয়ে কথা বলায় আটক এক তরুণ অধিকারকর্মী মঙ্গলবার (১৪ মে) কারাগারের একটি হাসপাতালে মারা গেছেন।
আল জাজিরা জানিয়েছে, ২৮ বছর বয়সি নেটিপর্ন বাং সানেসাংখোম নামের ওই অধিকারকর্মী জেলে যাওয়ার পরে অনশন শুরু করেছিলেন।
দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তার মৃত্যু বিচারিক প্রক্রিয়া পর্যালোচনা করার ক্ষেত্রে নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
উল্লেখ্য, থাইল্যান্ডের প্রচলিত আইন অহিংস অপরাধের জন্য অভিযুক্ত রাজনৈতিক অপরাধীদের বিচারের আগে কারাগারে বর্ধিত সময়ের জন্য আটকে রাখার অনুমতি দেয়।
নেটিপর্ন অধিকার গোষ্ঠী থালুওয়াং-এর সদস্য ছিলেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
রাজতন্ত্রের সংস্কার এবং রাজপরিবারের সদস্যদের মানহানির নামে হয়রানিমূলক আইনের বিলুপ্তির দাবিতে সাহসী এবং আক্রমণাত্মক প্রচারণার জন্য এই গোষ্ঠীটি পরিচিত।
গোষ্ঠীর নামের অর্থই হলো, ‘প্রাসাদ ভেঙ্গে দাও’, যা থাইল্যান্ডের রাজতন্ত্রের প্রকাশ্য সমালোচনার একটি প্রকাশ্য উদাহরণ।
নেটিপর্ন থাইল্যান্ডের প্রথম রাজনৈতিক কর্মী, যিনি বিচারের অপেক্ষায় ১১০ দিন ধরে আটক থাকালীন আংশিক অনশন চালিয়ে যাওয়ার পরে মারা গেলেন।
মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের থাইল্যান্ড শাখা নেটিপর্নের মৃত্যুকে মর্মান্তিক ঘটনা হিসাবে বর্ণনা করেছে।
গ্রুপটি বলেছে, থাই কর্তৃপক্ষ অধিকারকর্মীদের জামিনে অস্থায়ী মুক্তির অধিকার বাতিল করছে এবং ভিন্নমতের শান্তিপূর্ণ প্রকাশকে নীরব করার জন্য গ্রেপ্তারকে ব্যবহার করছে।’
গ্রুপটি আরও বলেছে, ‘এটি থাই সমাজের জন্য একটি ভয়াবহ দিন। এই দিনটি দেশটির গুরুতর বিচার বিভাগীয় হয়রানি এবং মৌলিক মানবাধিকারকে স্বীকৃতি দিতে বিচার ব্যবস্থার ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে। কথা বলায় কাউকে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যাওয়া উচিত নয়। এই ঘটনা পরিবর্তনকে অনুপ্রাণিত করবে।’
জনপ্রিয় বিরোধী দল মুভ ফরোয়ার্ড দল এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘রাজনৈতিক মতামত প্রকাশের জন্য মানুষকে কারাগারে রাখা উচিত নয় এবং রাজনৈতিক অপরাধের জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিদের জামিন দেওয়া উচিত।’
নেটিপর্নের মৃত্যুর পরে তাদের শোক প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ইইউ এবং অন্যত্র বিদেশী কূটনীতিকরা এবং রাষ্ট্রদূতরা।
জার্মান রাষ্ট্রদূত আর্নেস্ট রেইচেল সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ লিখেছেন, ‘আমার দাবি, রাজনৈতিক মতবিরোধকে এমন তিক্ত এবং চরম পরিণতির দিকে যেন নিয়ে যাওয়া না হয়।’