গাজার মধ্যাঞ্চলে ইসরায়েল ব্যাপক বোমা হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। এদিকে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি নিশ্চিতে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে আন্তর্জাতিক আলোচনা পুনরায় শুরু হয়েছে।
ইসরায়েল বুধবার (৫ জুন) রাতভর মধ্য গাজায় বোমা হামলা চালানোর পর বেশ কিছু হতাহতের খবর জানিয়েছেন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা। এ ছাড়া গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাতেও বোমা ও গোলা হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েল।
এর আগে ইসরায়েলি বাহিনী বুরেজ ও পূর্বাঞ্চলীয় দেইর আল বালাহতে সুনির্দিষ্ট অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছিল।
ফিলিস্তিনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আল-মাগহাজি ক্যাম্পের কাছে ইসরায়েলি হামলায় ১১ জন এবং দেইর আল বালাহর কাছে দুই জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে বেশ কয়েকজন।
দাতব্য সংস্থা মেডিসিনস সান্স ফ্রন্টিয়ার্স বলেছে, ‘মঙ্গলবার থেকে এ পর্যন্ত মধ্য গাজায় ইসরায়েলের ব্যাপক বোমা হামলায় অন্তত ৭০ জন নিহত এবং তিন শতাধিক আহত লোককে আল আকসা হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
গাজায় সংস্থাটির চিকিৎসা উপদেষ্টা পরিস্থিতি ভয়াবহ উল্লেখ করে বলেছেন, হাসপাতালের মেঝেতে ও সামনে আহত লোকজন পড়ে আছে। প্লাস্টিকের ব্যাগে করে লাশ আনা হচ্ছে।
অন্যদিকে, ছয় সপ্তাহের জন্যে যুদ্ধ বন্ধ, ফিলিস্তিনি বন্দীদের ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে জিম্মি মুক্তি এবং ত্রাণ সহায়তা জোরদারের তিন ধাপের যে ইসরায়েলি পরিকল্পনা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তুলে ধরেছেন তাতে সমর্থন দিয়েছে জি-৭ ভুক্তসহ কয়েকটি আরব দেশ।
যদিও হামাসের দাবি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার। হামাসের এ দাবি স্পষ্টতই প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরায়েল।
আলোচনার সঙ্গে সম্পর্কিত ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, কাতারের দোহায় বুধবার হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি নিয়ে আলোচনা করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী এবং মিসরের গোয়েন্দা প্রধান।
তবে বৈরুতে মঙ্গলবার হামাসের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেছেন, ‘তারা অন্তহীন আলোচনা চায়।’ তিনি তার গ্রুপের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, স্থায়ী যুদ্ধবিরতির শর্ত ছাড়া কোনো চুক্তিই মেনে নেওয়া হবে না।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আকস্মিক বড়ো ধরনের হামলা চালায় ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। এর প্রতিশোধ হিসেবে গাজায় ভয়াবহ অভিযান শুরু করে এবং তা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল।
গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত ওই হামলায় এ পর্যন্ত ৩৬,৫৮৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।