হিজবুল্লাহর একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বুধবার (১২ জুন) প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, সশস্ত্র গোষ্ঠীটি ইসরায়েলের উপর তাদের আক্রমণ বাড়াবে।
ইসরায়েল মঙ্গলবার (১১ জুন) দক্ষিণ লেবাননে বিমান হামলা চালিয়ে হিজবুল্লাহ’র সিনিয়র এক কমান্ডারকে হত্যা করার পর গোষ্ঠীটি এই প্রতিশ্রুতি দিল।
ইসরায়েলি হামলায় মঙ্গলবার নিহত কমান্ডার তালেব সামি আবদাল্লাহর দাফনের আগে বক্তৃতাকালে হিজবুল্লাহ কর্মকর্তা হাশেম সাফিদ্দীন বলেন, ‘আমরা আমাদের আক্রমণের তীব্রতা বাড়াবো।’
উল্লেখ্য, ইসরায়েলের বিমান হামলায় মঙ্গলবার (১১ জুন) ইরান সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র গ্রুপ হিজবুল্লাহ’র সিনিয়র কমান্ডার সামি আবদাল্লাহ নিহত হন।
বিশ্বস্ত একটি সূত্রে রয়টার্স জানিয়েছে, নয় মাসের এই সংঘাতে নিহত হওয়া হিজবুল্লাহ সদস্যদের মধ্যে সামি আবদাল্লাহই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও সিনিয়র সামরিক নেতা।
লেবাননের সামরিক সূত্রের তথ্যমতে, দক্ষিণ লেবাননের জুয়াইয়া শহরে ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহর এই জ্যেষ্ঠ কমান্ডারসহ মোট চারজন নিহত হন।
ইসরায়েলের হামলায় তিনি নিহত হয়েছেন বলে বুধবার (১২ জুন) নিশ্চিত করেছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
হিজবুল্লাহ’র বরাতে এএফপির খবরে বলা হয়, সংগঠনটির নিহত কমান্ডার সামি আবদুল্লাহ ওরফে আবু তালেবের জন্ম ১৯৬৯ সালে।
পরবর্তীতে অপর এক সদস্য নিহতের কথা জানায় হিজবুল্লাহ। দ্বিতীয় এই যোদ্ধার নাম মোহাম্মাদ হুসেন সাবরা। তিনি বাকের নামেও পরিচিত।
প্রসঙ্গত, নয় মাস আগে ইসরায়েলের ভূখন্ডে হামাসের হামলার পর থেকে গাজায় প্রতিশোধমূলক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।
এই সংঘাত শুরুর পর ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে হামলা শুরু করে সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ।
সাম্প্রতিক সময়ে হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের বাহিনীর মধ্যে সংঘাতের মাত্রা বেড়েছে। প্রায় প্রতিদিনই সীমান্তের উভয় পাশ থেকে হামলার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
মঙ্গলবারের এই হামলার বিষয়ে সরাসরি মন্তব্য না করলেও ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর বেশ কয়েকটি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে।
ইসরায়েলের দাবি, গত মঙ্গলবার সকালে হিজবুল্লাহ গোলান মালভূমিতে অন্তত ৫০টি রকেট হামলা চালানোর পর তারা এই পাল্টা হামলা চালিয়েছে।
এদিকে, গত ৯ মাসে লেবাননে ৪৬৭ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অন্তত ৯০ জন বেসামরিক ব্যক্তি ও ৩০৪ জন হিজবুল্লাহর যোদ্ধা রয়েছেন।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হিযবুল্লাহর হামলায় অন্তত ১৫ ইসরায়েলি সেনা ও ১১ বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
সংঘাত এড়াতে দুই দেশের সীমান্তবর্তী এলাকার হাজারো মানুষ ঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন।
গত সপ্তাহে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানান, লেবানন সীমান্তে চরম মাত্রার সামরিক অভিযান চালাতে ইসরায়েল প্রস্তুত এবং যেভাবেই হোক উত্তর সীমান্তে নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনবেন তিনি।