কাতারের গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি নিয়ে মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে আলোচনা শেষে দোহা ত্যাগ করেছেন ইসরায়েলের গোয়েন্দাপ্রধান ডেভিড বার্নে। আলোচনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছে।
আলোচনাটি স্পর্শকাতর হওয়ায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে সূত্রটি বলেছে, ডেভিড বার্নের নেতৃত্বে ইসরায়েলি প্রতিনিধি দল শুক্রবার (৫ জুন) দোহা ত্যাগ করেছে।
এর আগে তারা গাজায় যুদ্ধবিরতি বিষয়ক হামাসের প্রতিক্রিয়া নিয়ে কাতারের মধ্যস্থতকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগঠন হামাস ইসরায়েলে বড়ো ধরনের হামলা চালায়।
একইদিন ইসরায়েল গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে। ইসরায়েলের অব্যাহত এ হামলায় নিহত ফিলিস্তিনীর সংখ্যা ৩৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
এদিকে যুদ্ধ বন্ধ ও জিম্মি মুক্তি নিয়ে গত কয়েকমাস ধরেই নানাভাবে আলোচনা চালানো হচ্ছে। কিন্তু, এ পর্যন্ত কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জিত হয়নি।
কারণ, হামাসের দাবি হলো, জিম্মি মুক্তির বিনিময়ে গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং ইসরায়েলি বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার। কিন্তু, জিম্মি মুক্তির বিনিময়ে মাত্র ছয়মাসের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত রয়েছে ইসরায়েল।
এর আগে বুধবার (৩ জুলাই) বলেছিল যে, তারা ইসরায়েলের সঙ্গে প্রায় নয় মাসের গাজা যুদ্ধের অবসানের লক্ষ্যে কাতারি মধ্যস্থতাকারীদের কাছে একটি নতুন প্রস্তাব জমা দেয় হামাস।
ইসরায়েল নিশ্চিত করেছে যে, তারা ফিলিস্তিনি ভূখন্ডে তাদের জিম্মিদের মুক্ত করার চুক্তিতে হামাসের ওই প্রস্তাব মূল্যায়ন করছে এবং পরবর্তীতে মতামত জানাবে দেশটি।
এদিকে, গাজায় মৃতের সংখ্যা বাড়ছে এবং পরিস্থিতি প্রতিদিন খারাপ হচ্ছে। এমত অবস্থায় অতি সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রস্তাবিত একটি প্রস্তাবের ভিত্তিতে উভয় পক্ষই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে রয়েছে।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বার বার বলেছেন, হামাসের সামরিক ও শাসন ক্ষমতা ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলের গাজা অভিযান বন্ধ হবে না।
পাশাপাশি, হামাস বুধবার (২ জুলাই) সন্ধ্যায় বলেছে, তারা সংঘর্ষের অবসানের লক্ষ্যে কাতার, মিশর এবং তুরস্কের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে।
হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, কাতারভিত্তিক হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়াহ কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। হামাস নতুন প্রস্তাবটির ভিত্তিতে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর লক্ষ্যে তাদের সঙ্গে আলোচনা করছেন তিনি।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘হামাস প্রধান এবং তুরস্কের কর্মকর্তাদের মধ্যেও যোগাযোগ হয়েছে।’ উল্লেখ্য, জিম্মি মুক্তি এবং যুদ্ধ বিরতির মধ্যস্থতা প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দিয়েছে কাতার।
হামাসের আগের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ‘আমাদের ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে আগ্রাসন বন্ধ করার লক্ষ্যে আমরা মধ্যস্থতাকারী ভাইদের সঙ্গে একটি প্রস্তাব শেয়ার করেছি।’
এরপর ইসরায়েলের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জিম্মি চুক্তির মধ্যস্থতাকারীরা আলোচনাকারী দলকে জিম্মি চুক্তির রূপরেখা সম্পর্কে হামাসের মন্তব্য জানিয়ে দিয়েছে। ইসরায়েল মন্তব্যটি মূল্যায়ন করছে এবং মধ্যস্থতাকারীদের কাছে তার জবাব জানাবে।’