গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা ঠিক এক বছর পূর্ণ করল। ইসরায়েলি বাহিনীর সামরিক আগ্রাসনে অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে নিহত হয়েছে প্রায় ৪৩ হাজার মানুষ। আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় এক লাখে। তবুও হামলা বন্ধের ন্যূনতম ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে না তেলআবিবের পক্ষ থেকে। ক্রামগত যুদ্ধবিরতির আহ্বানকে পাত্তাই দিচ্ছেন না ইসায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, উপরন্তু লেবাননে আক্রমণ শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
এর মধ্যেই ইসরায়েলের জন্য রসদ হিসেবে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। সম্প্রতি ফ্রান্স ইন্টারে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ আহ্বান জানান তিনি।ম্যাক্রোঁর এ ধরনের বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এক বছর যাবত চলমান গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলের জন্য রসদ হিসেবে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। ফরাসি প্রেসিডেন্ট জানান, এই মুহূর্তে তিনি মনে করছেন ফিলিস্তিন নিয়ে রাজনৈতিক সমাধানের পথে ফিরে যাওয়াটাও অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত। এ লক্ষ্যে পশ্চিমারা গাজা যুদ্ধের জন্য অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে দিতে পারে।
সাক্ষাৎকারে ফরাসি প্রেসিডেন্ট জানান, গাজা যুদ্ধের জন্য ইসরায়েলকে কোনো প্রকার অস্ত্র দিচ্ছে না ফ্রান্স। যদিও ফ্রান্স ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র সরবরাহকারী দেশগুলোর তালিকায় নেই। তবে জাতিসংঘের স্থায়ী সদস্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রভাবশালী সদস্য হিসেবে ফ্রান্সের এমন মন্তব্য বেশ গুরুত্ব বহন করে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট মনে করেন, এই সংঘাত জাতিঘৃণার দিকে এগিয়ে গেছে। এ সময় লেবাননে ইসরায়েলি স্থলবাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্তের জন্য নেতানিয়াহুর সমালোচনা করেন ম্যাক্রোঁ। তিনি জানান, এই মুহূর্তে সংঘাত কমিয়ে আনাকে অগ্রাধিকার দেয়া উচিত। লেবানন আরেকটি গাজা হয়ে উঠতে পারে না, এমনকি লেবাননের জনগণ তাদের প্রাণ হারাতে পারেন না।
ম্যাক্রোঁর এমন মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া জানান নেতানিয়াহু। বলেন, যখন সারাবিশ্ব ইরানি বর্বরতার বিরুদ্ধে ইসরায়েলের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এই সময়ে এসেও ম্যাক্রোঁসহ বেশ কয়েকজন পশ্চিমা নেতা ইসরায়েলের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন। তাদের প্রতি ধিক্কার।
নেতানিয়াহুর দাবি, যারা এই সন্ত্রাসের জোটের বিরোধিতা করার দাবি করে, তারাই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানাচ্ছে। কত বড় লজ্জা! ইসরায়েল তাদের সমর্থন ছাড়াই জয়লাভ করবে। কিন্তু তাদের লজ্জা যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরও থেকে যাবে। কারণ, নিজেদের এই বর্বরতার বিরুদ্ধে রক্ষা করার মাধ্যমে, ইসরায়েল সভ্যতাকে রক্ষা করছে। তাদের বিরুদ্ধে যারা আমাদের সবার ওপর অন্ধকার যুগের উগ্রবাদ চাপিয়ে দিতে চায়। নিশ্চিত থাকুন,নিরাপত্তা ও বিশ্বশান্তির জন্য ইসরায়েল লড়াই চালিয়ে যাবে, ঠিক ততক্ষণ, যতক্ষণ না আমরা বিজয়ী হবে।