১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলে উগ্র হিন্দু করসেবকরা। এটা নিয়ে মামলার প্রেক্ষিতে ৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট তাদের রায়ে অযোধ্যার কোনো উল্লেখযোগ্য স্থানে বিকল্প মসজিদ তৈরির জন্য সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে পাঁচ একর জমি দিতে বলে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে পাঁচ একর জমি মসজিদ নির্মাণ ট্রাস্টকে দেওয়া হয়।
পরে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ইন্দো ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট ১৯ ডিসেম্বর ধন্নিপুরে নতুন জায়গায় নতুন মসজিদ তৈরির নকশা প্রকাশ করে। আগামী বছরের ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসে প্রস্তাবিত মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করার কথা রয়েছে।
নতুন মসজিদের নকশা প্রকাশ করতে না করতেই মুসলমানদের দু’টি সংগঠনের মধ্যে মতানৈক্য প্রকট হয়ে উঠেছে।
বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) ভারতের প্রভাবশালী মুসলিম সংগঠন অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ওই মসজিদ যদি হয় তা হবে অবৈধ নির্মাণ।
ল বোর্ডের প্রতিনিধি জাফরইয়াব জিলানি বলেছেন, ওয়াকফ আইন এবং শরিয়তের বিধান অনুযায়ী মসজিদের জমি বিনিময় করা যায় না। মসজিদও একটির জায়গায় অন্য একটি তৈরি করা যায় না। কাজেই অযোধ্যায় যে নতুন মসজিদ নির্মাণের কথা ভাবা হচ্ছে, তা অবৈধ ও বেআইনি।
জিলানি বাবরি মসজিদ অ্যাকশন কমিটিরও সদস্য। ওই কমিটি সুপ্রিম কোর্টের রায়ে খুবই অসন্তুষ্ট।
তবে মসজিদ নির্মাণে প্রসঙ্গে উত্তরপ্রদেশ সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের সম্পাদক আতাহার হোসেন বলেছেন, সুপ্রিম কোর্ট রামজন্মভূমি মামলার রায়ে ওই জমি দিতে বলেছে। সে অনুযায়ী সেখানে যে মসজিদ নির্মাণ হচ্ছে, তাকে কোনোভাবেই বেআইনি বলা যায় না। আর শরিয়তের বিধান এক এক জন এক এক রকমভাবে ব্যাখ্যা করেন। সুতরাং যারা এটাকে অবৈধ বলছেন তাদের ব্যাখ্যার সঙ্গে আমাদের ব্যাখ্যা মেলে না।
অন্যদিকে অযোধ্যা মামলার অন্যতম মামলাকারী জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের (জেইউএইচ) সভাপতি মাওলানা আরশাদ মাদানীও বিকল্প জমি গ্রহণ না করার পক্ষে তাদের মত দিয়েছেন।
তার মতে, মসজিদের পরিবর্তে বিকল্প কিছু নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। না টাকা, না জমি। কোনো মুসলিম সংগঠনেরই এই অদল-বদল স্বীকার করা উচিত নয়।
এমনকি হায়দরাবাদের এমপি আসাদুদ্দিন ওয়াইসিও এই জমি নেওয়ার বিপক্ষে মত দিয়েছেন।