রাশিয়ায় জনসংখ্যার ২০ ভাগ মুসলিম। স্থাপত্য নকশায় অনিন্দ্য সুন্দর অনেক ঐতিহাসিক ও প্রাচীন মসজিদ রয়েছে দেশটিতে। এর অন্যতম একটি হলো- লালা তুলপান মসজিদ। রাশিয়ার ইসলামিক সংস্কৃতিতে এই মসজিদ বেশ পরিচিত। মসজিদটি রাশিয়ার উফায় অবস্থিত। এই মসজিদের মিনার দু’টির উচ্চতা ৫৩ মিটার।
মসজিদের ডিজাইন দুই মিনার সম্বলিত ফুটন্ত আকৃতি টিউলিপ ফুলের মতো বলে এর এমন নামকরণ করা হয়েছে, ‘টিউলিপ ব্লোসম মসজিদ।’
টিউলিপ রাশিয়ার বিখ্যাত একটি ফুলের নাম। দূর থেকে দেখতে মসজিদটি টিউলিপের মতো। তাই এই মসজিদের এমন নাম রাখা হয়েছে। আধুনিক স্থাপত্যের কারণে মসজিদটি পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে।
মসজিদে রয়েছে আলাদা আলাদা দু’টি প্রবেশদ্বার। একসঙ্গে এখানে ১ হাজার মুসল্লি নামাজ পড়তে পারেন। সৌন্দর্যের দিক দিয়ে রাশিয়ার অন্যতম মসজিদ লালা তুলপান।
লালা তুলাপান মসজিদের নির্মাণ শুরু হয় ১৯৯০ সালে। টানা আট বছর নির্মাণ কাজ চলে। অবশেষে ১৯৯৮ সালে এটি নামাজের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এই মসজিদের নকশা করেছেন ওয়াকিল দেভলিয়াশিন। বসন্তের ফুটন্ত টিউলিপকে মসজিদের নকশার ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করেন তিনি। ২০০১ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই মসজিদে মুসলিম নেতা ও আলেম-উলামাদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন। এর পর থেকে মসজিদটি ব্যাপকভাবে পরিচিতি লাভ করে।
মসজিদটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যা কেবল প্রবীণ নয়; যুবসমাজের জন্যও আকর্ষণীয়। শান্তি ও বন্ধুত্বের প্রতীক এই মসজিদ। দেখতে ঠিক ছবির মতো এই মসজিদটি যেকোনো ধর্মের মানুষ ঘুরে দেখতে পারেন।
শুধু লম্বা মিনার ও টিউলিপ আকৃতি নয়, মসজিদের অভ্যন্তরে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে রঙিন কাঁচের জানালা স্থাপন করা হয়েছে। মসজিদের দেয়ালে গাছ ও ফুলের চিত্র সুন্দরভাবে আঁকা হয়েছে।
স্থানীয় মুসলমানদের কাছে লালা তুলপান শুধু একটি মসজিদ নয়। এটি তাদের মিলন স্থান। মসজিদ সংলগ্ন কোরআন শিক্ষার মাদরাসা, ধর্মীয় আলোচনার জন্য বিশাল হলরুমও রয়েছে। রয়েছে নারী ও পুরুষদের জন্য আলাদা আলাদা নামাজের কক্ষ।
মিনার দু’টি মসজিদের প্রবেশদ্বারের দু’দিকে অবস্থিত। ফুটন্ত টিউলিপের আকারে তৈরি মসজিদটি উফাবাসীদের গর্ব। বেলা নদীর উপকূলে অবস্থিত মসজিদটি মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে হওয়ায় যে কারও দৃষ্টি খুব সহজেই কাড়ে।