ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াসের’ প্রভাবে উত্তাল সাগর। পটুয়াখালীর নদ-নদীতে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে। জোয়ারের পানির চাপে জেলার উপকূলীয় এলাকার বিভিন্ন স্থানে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের এক বছর কাটতে না কাটতেই ফের ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ধেয়ে আসছে সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলের দিকে। তাই তো ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের ভয়ে উপকূলীয়বাসী আতঙ্কগ্রস্ত। আসুন আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হই, সৃষ্টিকর্তার দরবারে সকাতর প্রার্থনা করি আর আশ্রয় কেন্দ্রে বা নিরাপদ স্থানে অবস্থান করি।
হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়া বইলে রাসুলুল্লাহ (সা.) মসজিদে যেতেন এবং নামাজে মশগুল হতেন (মিশকাত)। সাহাবিদের জীবনে আমরা দেখি, বিপদে-মুসিবতে তারা নামাজে দাঁড়াতেন ও ধৈর্য ধারণ করতেন। (মিশকাতুল মাসাবিহ)
ঘূর্ণিঝড় ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময় রাসুল (সা.) তার উম্মতকে বিচলিত না হয়ে দোয়ার শিক্ষা দিয়েছেন। ঘূর্ণিঝড় ও বিপদাপদ থেকে নিরাপদ থাকতে পবিত্র কোরআনের বিশেষ দোয়া- ‘রাব্বানাকশিফ আন্নাল আজাবা ইন্না মুমিনুন।’ অর্থ : ‘হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের উপর থেকে আপনার শাস্তি প্রত্যাহার করুন, আমরা বিশ্বাস স্থাপন করছি।’ (সুরা দুখান : আয়াত ১২)
প্রবল ঘূর্ণিঝড়-বৃষ্টিতে যদি মানুষের জন জীবনের ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে কিংবা ফসলাদি নষ্ট হয় বা চলাচলের রাস্তা-ঘাট পানিতে তলিয়ে যায়, তবে সে অবস্থায় প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ দোয়া পড়তেন-‘আল্লাহুম্মা হাওয়ালাইনা ওয়ালা আলাইনা।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমাদের থেকে (ঘূর্ণিঝড়, বৃষ্টি) ফিরিয়ে নাও, আমাদের ওপর দিয়ো না।’ (বোখারি)
জোরে বাতাশ প্রবাহিত হলে তিনি (সা.) যে দোয়া পড়তেন-‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাহা, ওয়া আউযুবিকা মিন শাররিহা’ অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট এর কল্যাণটাই কামনা করি। এবং আপনার নিকট এর অনিষ্ট থেকে আশ্রয় চাই। (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ)
ঝড় বা বাতাস থেকে বাঁচতে মহানবী (সা.) যে দোয়া পড়তেন- ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা মিন খাইরি হাজিহির রিহি ওয়া খাইরা মা ফিহা ওয়া খাইরা মা উরসিলাত বিহি, ওয়া আউযুবিকা মিন শাররিহা, ওয়া শাররি মা ফিহা ওয়া শাররি মা উরসিলাত বিহি।’ অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট প্রার্থনা করি এর কল্যাণ, এর মধ্যকার কল্যাণ এবং যা এর সাথে প্রেরিত হয়েছে তার কল্যাণ। আর আমি আপনার আশ্রয় চাই এর অনিষ্ট থেকে, এর ভেতরে নিহিত অনিষ্ট থেকে এবং যা এর সঙ্গে প্রেরিত হয়েছে তার অনিষ্ট থেকে। (বোখারি)
আসুন, আমরা আমাদের পাপ সমূহের জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে ক্ষমা চাই আর অধিক হারে দোয়ায় রত হই। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে ঘূর্ণিঝড়সহ প্রাকৃতিক সব বিপদাপদ থেকে রক্ষা করুক, আমিন।
লেখক: ইসলামী গবেষক ও কলামিস্ট, ই-মেইল- masumon83@yahoo.com