কোরআনে কারিমে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘নাকি আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে মানুষদেরকে যা দান করেছেন, সে বিষয়ে তারা তাদেরকে হিংসা করে।’ -সুরা আন নিসা : ৫৪
হিংসা এমন এক ব্যাধি যা শুধু মনের নয়, দেহেরও ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে। বলা হয়, হিংসুক লোকের কোনো বিশ্রাম (ঘুম) নেই ও সে বন্ধুর লেবাসে একজন শক্র। হিংসারোগ সম্বন্ধে আরও বলা হয়, এটা একটি ভয়। কেননা, এটা হিংসুককে প্রথমে হত্যা করে (অর্থাৎ হিংসা হিংসুককে তিলে তিলে ধ্বংস করে)। এ কারণে বুজুর্গ আলেমরা হিংসা করতে নিষেধ করেন। এটা ইসলামের নির্দেশনাও। অন্যের প্রতি হিংসা করে নিজেদের রক্তে মাংসে গড়া দেহখানাকে দুর্দশাগ্রস্ত করা, গভীর ঘুমকে নষ্ট করা, শরীর-স্বাস্থ্য খারাপ করা ছাড়া আর কিছুই মেলে না। হিংসুক ব্যক্তি (যেন) আগুন জ্বালিয়ে সে আগুনে নিজেই ঝাপ দেয়। হিংসা দুঃখ-বেদনা ও ভোগান্তি এনে এক সময়ের শান্তিপূর্ণ ও পূর্ণময় জীবনকে ধ্বংস সাধন করে।
হিংসুক ব্যক্তির অভিশাপ হলো, সে ভাগ্যকে অস্বীকার করে এবং তার স্রষ্টাকে অবিবেচক মনে করে।
হিংসা একটি রোগ। তবে এটা অন্যান্য রোগের মতো নয়। হিংসুক ব্যক্তি এ রোগের কারণে পরকালে কোনো পুরস্কার পাবে না। অথচ অন্যান্য রোগাক্রান্তরা তাদের রোগ ভোগ ও তাতে ধৈর্য ধরার কারণে পরকালে পুরস্কার পাবে।
হিংসুক ব্যক্তি তার মৃত্যুর দিন পর্যন্ত বা অন্যদের সৌভাগ্য তাদের থেকে বিদায় না নেওয়া পর্যন্ত প্রচণ্ড ক্রোধে জ্বলে পুড়ে শেষ হতে থাকবে। হিংসুক ব্যক্তি ছাড়া সকলের সাথেই মীমাংসা করা সম্ভব। কেননা, তার সঙ্গে মীমাংসার জন্য যা প্রয়োজন তা হলো- আপনি আপনার থেকে আল্লাহর সব কল্যাণ ও করুণা দূর করবেন বা আপনার সকল প্রতিভা ও সদগুণ পরিত্যাগ করবেন। যদি আপনি এরূপ করেন তবে হয়তোবা সে সুখী হবে। আল্লাহর নিকট আমরা হিংসুকের ক্ষতি হতে আশ্রয় প্রার্থনা করি। হিংসুক এমন এক বিষধর কালো সাপের মতো হয়ে যায়- যে সাপ একটি নির্দোষ দেহে এর বিষ ঢেলে না দেয়া পর্যন্ত কোনো বিশ্রাম পায় না।
সুতরাং হিংসা থেকে বহু দূরে থাকুন এবং হিংসুক লোক থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করুন। কেননা, সে সর্বদা আপনাকে সতর্কভাবে লক্ষ্য করছে।