যদি কেউ ছোট কোনো গোনাহে নিয়মিত জড়াতে থাকে, হাদিসের ভাষ্য অনুসারে, এ কাজ তাকে ধ্বংস করে দিতে পারে। যেমন, মনে করুন, প্রতিদিন একজন ব্যক্তি পাঁচ টাকা অযথা খরচ করে। লোকটি যদি কোটিপতি কিংবা লাখপতিও হয় তবে এ পাঁচ টাকা তার জন্যে কোনো বিষয়ই নয়। অথচ প্রতিদিনের এ পাঁচ টাকাই মাস শেষে হয়ে যাচ্ছে- ১৫০ টাকা, বারো মাসে হচ্ছে- ১৮০০ টাকা। দশ বছরে এর পরিমাণ হবে ১৮০০০ টাকা!
অযথা এ টাকা খরচের পাপ কী পরিমাণ হবে, তা নির্ভর করবে কাজটি কোন্ পর্যায়ের- হারাম না মাকরুহ- তা নির্ণয় করার ওপর। এর সঙ্গে অর্থহীন কাজে টাকা খরচ করার নিষিদ্ধতা তো রয়েছেই।
হাদিস শরিফে এমন অনেক আমলের কথা বর্ণিত হয়েছে, যেগুলো বাহ্যত খুবই ছোট, একেবারে সাধারণ বলা চলে। কিন্তু ক্ষুদ্র ও সাধারণ এ আমলগুলোর জন্য ঘোষিত হয়েছে অগণিত পুরস্কার। ছোট সে আমলগুলো যদি নিয়মিত করা যায়, তবে তো ওপরের গাণিতিক হিসাবও এখানে যথেষ্ট নয়।
দেখুন, ফজরের নামাজের পর নিজ জায়গায় বসে যদি কেউ ইবাদত-বন্দেগি করতে থাকে, এরপর সূর্য ওঠার পর দুই রাকাত ইশরাকের নামাজ আদায় করে, তবে সে একটি হজ ও একটি উমরা আদায়ের সওয়াব পাবে। অথচ এই দুই রাকাত নফল নামাজ- ওয়াজিব কিংবা ফরজ নয়, সুন্নতে মোয়াক্কাদাও নয়। এমন দুই রাকাত নামাজের বদলায় পাওয়া যাচ্ছে- একটি নফল হজ ও একটি নফল উমরার সওয়াব। বছরের পর বছর ধরে যে নিয়মিত ইশরাকের নামাজ আদায় করে যাচ্ছে, তার পুরস্কারের হিসাব কি নামাজে তেলাওয়াতকৃত সুরাগুলোর অক্ষরসংখ্যা, নামাজের প্রতিটি দোয়া ও জিকিরের অক্ষরসংখ্যা ইত্যাদি অনুসারে এখানে করা যাবে? না, তার জন্যে ঘোষিত হয়ে আছে আরও অনেক অনেক বড় পুরস্কার। গাণিতিক হিসাব তাই এখানে অচল। এভাবেই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আমলগুলো আমাদের আমলনামাকে সমৃদ্ধ করতে পারে, আমাদের পরকালকে আলোকিত করে তুলতে পারে এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তির ওসিলা হতে পারে।