ইউরোপের দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চলের দেশ বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা| বলকান উপদ্বীপের দেশটি ত্রিভুজ আকৃতির। বসনিয়া অঞ্চলটি উত্তরে পাহাড় ও গভীর বনবেষ্টিত। বিশাল এলাকাজুড়ে অমসৃণ ও সমতল কৃষিভূমির হার্জেগোভিনা অঞ্চলটি দক্ষিণে। এর সংকীর্ণ উপকূল। দেশটির আয়তন ৫১ হাজার ১২৯ বর্গকিলোমিটার। রাজধানীর সারায়েভো। বসনিয়ার বাসিন্দাদের মধ্যে মুসলিম ৪৪ শতাংশ, সার্ব ৩১ শতাংশ ও ক্রোয়েট ১৭ শতাংশ।
বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার একটি শহর জভোর্নিক। দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় সারবাসকা প্রদেশে অবস্থিত এ শহরের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে দ্রিনা নদী। নদীর তীরবর্তী পাহাড়ের চূড়ায় কুশলাত মসজিদের অবস্থান। এ মসজিদের অবাক করা বিষয় হলো, বছরে একবার এখানে জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিদিনের অন্যান্য নামাজ এখানে অনুষ্ঠিত হয় না। কেননা হেঁটে প্রতিদিন বিপজ্জনক সরু পথ পাড়ি দিয়ে পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছা সবার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই বছরে একবারই এ মসজিদে জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ গত ২৬ আগস্ট এখানে জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
আশপাশের মুসলিমরা আগ্রহভরে এ নামাজে অংশ নেন। এতে ইমাম ছিলেন শায়খ আহমেদ হোসকানোভিচ।
কুশলাত মসজিদকে ‘বিজয়ের প্রতীক’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার অন্যতম এই প্রাচীন মসজিদের আকৃতি অনেকটা বাজপাখির বাসার মতো। মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক এলাকায় অবস্থিত মসজিদটির উচ্চতা ও দৃষ্টিনন্দন প্রাচীন সাজসজ্জা একে অনন্য অবস্থানে নিয়ে গেছে।
ইসলামিক ইউনিয়ন অব ইমামের প্রধান আহমেত হোসকানোভিচ জুমার খুতবায় বলেছেন, ‘কুশলাত মসজিদ বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার অন্যতম প্রাচীন মসজিদ। উসমানীয় শাসনামলের প্রথম দিকে তা নির্মিত হয়। ১৪৬০-১৪৮০ সালে অঞ্চলটি বিজয়ের সময় উসমানীয় সেনারা মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেছিল। কনজেভেজ পোলজে ও জোভরনিক এলাকার মধ্যে একটি পাহাড়ের চূড়ায় তা তৈরি করা হয়।
১৯৯২-১৯৯৫ সালে বসনিয়া হত্যাযজ্ঞ ও যুদ্ধের সময় সার্ব সৈন্যরা মসজিদটি পুড়িয়ে দিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে কয়েকটি মুসলিম দেশের সহায়তায় মসজিদটি পুনরুদ্ধার ও সংস্কারের পর ২০১৩ সালে তা মুসল্লিদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এখানে প্রতিবছর আগস্টের শেষ সপ্তাহে জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।