সৌদি আরবের পবিত্র মক্কায় অনুষ্ঠিত ৪৩তম বাদশাহ আব্দুল আজিজ আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন ও তাফসির প্রতিযোগিতায় দুই বাংলাদেশি হাফেজ নিজ নিজ গ্রুপে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান লাভ করে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন।
প্রতিযোগিতায় তাজবিদসহ সুন্দর কণ্ঠে পূর্ণ কোরআন হিফজ গ্রুপে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন হাফেজ ফয়সাল আহমদ। পুরস্কার হিসেবে তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৮০ হাজার সৌদি রিয়াল, সম্মাননা সনদ ও ক্রেস্ট।
প্রতিযোগিতায় তাজবিদসহ ১৫ পারা হিফজ গ্রুপে অংশ নেওয়া অপর প্রতিযোগী হাফেজ মো. মুশফিকুর রহমান চতুর্থ স্থান লাভ করেছেন। তিনি পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন ১ লাখ ২০ হাজার সৌদি রিয়াল, সম্মাননা সনদ ও ক্রেস্ট।
প্রতিযোগিতায় ১১৭টি দেশের ১৬৬ জন হাফেজ অংশ নেন।
বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে বর্ণাঢ্য এক অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয় মসজিদে হারামের নতুন সম্প্রসারিত অংশে। সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের পক্ষ থেকে পুরস্কারের অর্থ ও সম্মাননা সনদ তুলে দেন মক্কা মোকাররমার গভর্নর শায়খ বান্দার বিন সুলতান বিন আব্দুল আজিজ ও সৌদি আরবের ধর্ম মন্ত্রী শায়খ ড. আব্দুল লতীফ।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কাবার খতিব শায়খ সালেহ আল হুমাইদ, শায়খ আব্দুর রহমান আস সুদাইস, শায়খ মাহের আল মুআইকিলী, শায়খ ইয়াসির আদ দাওসারী, মসজিদ বিষয়ক সচিব শায়খ সুলাইমান বিন ফাহাদ, বিচারক কমিটির চেয়ারম্যান ও কিং সালমান বিন আব্দুল আজিজ প্রাসাদ এর খতিব শায়খ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহমান আশ শিছরী, মুহাম্মদ বিন আহমদ আল বারহাজী, প্রতিযোগিতার বিচারক বাংলাদেশেরর মাওলানা ওয়ালীয়ুর রহমান খান, শায়খ মুহাম্মদ বিন আতীক ও আবূ বকর বিন মুআল্লিমসহ উচ্চপদস্থ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ।
হাফেজ ফয়সাল আহমাদ রাজধানীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার ছাত্র। মাদরাসাটির প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক হলেন শায়খ হাফেজ নেছার আহমাদ আন নাছিরী। হাফেজ ফয়সাল চলতি বছরের মার্চ মাসে লিবিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন তিনি। আর হাফেজ মুশফিকুর রহমান কক্সবাজারের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মাহাদ আন নিবরাসের ছাত্র।
গত ২৫ আগস্ট সৌদি আরবের ইসলাম ও দাওয়াহ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে মক্কায় ৪৩তম আন্তর্জাতিক এ প্রতিযোগিতা শুরু হয়। প্রতিযোগিতার পাঁচ ক্যাটাগরিতে বিজয়ীরা পাবেন সর্বমোট ৪০ লাখ সৌদি রিয়াল পুরস্কার।
সৌদি আরবের ইসলাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রতিযোগিতা পাঁচটি ক্যাটাগরিতে অনুষ্ঠিত হয়। তা হলো- ১. শাতেবি পদ্ধতিতে সাত কিরাতসহ সুন্দর কণ্ঠে পূর্ণ কোরআন হিফজ, ২. তাজবিদসহ সুন্দর কণ্ঠে পূর্ণ কোরআন হিফজ এবং একক শব্দগুলোর তাফসির, ৩. তাজবিদসহ সুন্দর কণ্ঠে পূর্ণ কোরআন হিফজ, ৪. তাজবিদসহ ১৫ পারা হিফজ, ৫. তাজবিদসহ পাঁচ পারা হিফজ (শেষোক্ত বিভাগটি ওআইসিভুক্ত নয় এমন দেশের জন্য প্রযোজ্য)।
গত বছর (২০২২) এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ থেকে হাফেজ সালেহ আহমদ তাকরীম অংশ নিয়ে তৃতীয় স্থান অর্জন করেন। বিজয়ী হিসেবে তিনি এক লাখ রিয়াল (প্রায় সাড়ে ২৭ লাখ টাকা) পুরস্কার ও সম্মাননা ক্রেস্ট লাভ করেন। এর আগে এই প্রতিযোগিতায় ২০১৩ সালে ৭০টি দেশের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ নাজমুস সাকিব। ২০১৭ সালে ৭৩টি দেশের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ আবদুল্লাহ আল মামুন।
মক্কায় কোরআন প্রতিযোগিতা সম্পন্ন, আশাবাদী বাংলাদেশের প্রতিযোগী