ছারছীনা থেকে মো. আবদুর রহমান : মুসলমানদের ঈমান ও আমল ইসলাহের (সংশোধন) জন্যই ছারছীনার মাহফিলের সূচনা হয়েছিল। মরহুম দাদা হুজুর কেবলা শাহ সুফী নেছারুদ্দীন আহমদ (রহ.)-এর জীবদ্দশায় দেশে বৃটিশ শাসন ছিল। তখন মুসলমানরা হিন্দু জমিদার ও ইংরেজ শাসকদের সম্মিলিতি অত্যাচারে পিষ্ট হয়ে ধর্মীয় পরিচয় ভুলে গিয়েছিল। নাম মাত্র মুসলমান হিসেবে তাদের মধ্যে না ছিল ইসলামি শিক্ষা, আমল, কৃষ্টি, সভ্যতা ও সংস্কৃতি। কুসংস্কার, কুফর, শিরক ও বিদআতে নিমজ্জিত হয়ে তারা সত্যের পথ থেকে বহু দূরে ছিটকে পড়েছিল। তখন দাদা হুজুর (রহ.) তার সর্বশক্তি দিয়ে সমাজ সংস্কারে ঝাপিয়ে পড়েন। নিজ বাড়ীতে বার্ষিক মাহফিল কায়েম ছাড়াও দেশের আনাচে-কানাচে গিয়ে ওয়াজ মাহফিল, মিলাদ-মাহফিল, জিকিরের মজলিস ও তালিমি জলসা কায়েম করেন। তিনি যেখানেই যেতেন, যেখানেই হয় একটি মাদ্রাসা, নয় একটি মক্তব, অথবা একটি মসজিদ কিংবা একটি খানকা প্রতিষ্ঠা করতেন। নিজ বাড়ীর ছারছীনা দারুস সুন্নাত কামিল মাদ্রাসায় হাদিস পাঠদানের ব্যবস্থা করে দেশে যোগ্য আলেম ও মুদাররিস সরবরাহের ব্যবস্থা করেন। এভাবেই ক্রমান্বয়ে দেশময় ইসলামের বিপ্লব সাধিত হয়। আমরা এখন তার কাজের সুফল ভোগ করছি।
বুধবার (২৯ নভেম্বর) ছারছীনা দরবার শরীফের তিন দিনব্যাপী মাহফিলের প্রথম দিন বাদ মাগরিব তালিম প্রদানকালে আমিরে হিযবুল্লাহ ছারছীনা শরীফের পীর সাহেব আলহাজ হজরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মাদ মোহেব্বুল্লাহ্ এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আল্লাহর শোকরিয়া শত বছর পার হয়ে গেলেও এই দরবার যে নীতি ও আদর্শের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, বর্তমানে সেভাবেই অক্ষুন্ন রয়েছে; তাতে বিন্দুমাত্র ব্যতিক্রম হয়নি।
এ সময় তিনি মাহফিলের পরিবেশকে বিদআত মুক্ত রাখতে এলাকাবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন।
উদ্বোধনের পর গভীর রাত পর্যন্ত মাদ্রাসার ছাত্ররা কেরাত, হামদ, নাত, মারছিয়া, দীনি তারানা এবং বিভিন্ন ভাষায় ওয়াজ-বক্তৃতা পেশ করেন।
বাদ ফজর হজরত মাওলানা শাহ্ আবু নছর নেছার উদ্দিন আহমদ হুসাইন বড় হুজুর তালিম দেন। মাহফিলে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন- মাওলানা আ জ ম অহিদুল আলম, মাওলানা শামসুল আলম মুহিব্বী, মাওলানা মো. মুহিব্বুল্লাহ আল মাহমুদ, মুফতি মাওলানা মো. হায়দার হুসাইন, হজরত মাওলানা শাহ আবু বকর মোহাম্মদ ছালেহ্ নেছারুল্লাহ্ ও মাওলানা মাহমুদুল মুনীর হামীম প্রমূখ।