নববর্ষ উদযাপনে ইসলামের বিধান

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

প্রতীকী ছবি: সংগৃহীত

প্রতীকী ছবি: সংগৃহীত

মুসলিম সমাজে নববর্ষ উদযাপন একটি আলোচিত বিষয়, যা বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করা হয়। এটি ইসলামি নীতিমালা, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে।

ইসলামের শিক্ষা অনুযায়ী, জীবনের প্রতিটি কার্যক্রমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করার উদ্দেশ্য থাকা উচিত। নববর্ষ উদযাপন ঘিরে এই নীতির বাস্তবায়ন কীভাবে সম্ভব, তা গভীরভাবে বিশ্লেষণের দাবি রাখে।

বিজ্ঞাপন

ইসলামি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, নববর্ষ শুরু হয় মহররম মাসের প্রথম দিনে। এটি হিজরি সনের সূচনা এবং একটি তাৎপর্যপূর্ণ সময়। মহররম মাসে বিশেষ করে আশুরার দিনটি রোজার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বর্ণিত হয়েছে। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) এই দিনে রোজা পালনের নির্দেশ দিয়েছেন, যা আত্মশুদ্ধি এবং আল্লাহর কাছে নিকটবর্তী হওয়ার একটি উপায়।

ইসলামে নববর্ষ উদযাপনের কোনো বিধান নেই। নববর্ষ উদযাপনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন হারাম কার্যকলাপ জড়িত থাকায় ইসলাম এর অনুমোদন দেয় না। এর বাইরে অশ্লীলতা, অপচয়, মদ্যপান, নগ্নতা, মাত্রাতিরিক্ত আনন্দ, আতশবাজি এবং অন্যের ক্ষতির কারণ হয় এমন কাজের অনুমোদন ইসলাম দেয় না। এসব কাজ ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। প্রত্যেক মুমিন-মুসলমানের এসব কাজ থেকে বিরত থাকা দরকার।

বিজ্ঞাপন

সমাজের প্রেক্ষাপটে নববর্ষ উদযাপন প্রায়শই উচ্ছৃঙ্খলতার রূপ নেয়। আতশবাজি, পটকা ফুটানো এবং অতিরিক্ত পার্টি অনেক সময় সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। এমন পরিস্থিতিতে একজন মুসলিমের উচিত সতর্ক থাকা এবং এই ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে দূরে থাকা। নববর্ষ উদযাপনকে যদি শান্ত, ইতিবাচক এবং শিক্ষামূলক হিসেবে রূপান্তর করা যায়, তবে তা একটি ভারসাম্যপূর্ণ উদাহরণ হতে পারে।

মুসলিমদের উচিত নববর্ষ উদযাপনের সময় ইসলামের মৌলিক নীতিগুলো অনুসরণ করা। দোয়া, আত্ম-পর্যালোচনা এবং নতুন বছরের জন্য লক্ষ্য নির্ধারণ একটি সুন্দর ও অর্থবহ পদ্ধতি হতে পারে। পাশাপাশি, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ, এবং পরোপকার ও কল্যাণমূলক কাজ করার মাধ্যমে নববর্ষ উদযাপনকে অর্থপূর্ণ করা সম্ভব।

নববর্ষ উদযাপন একজন মুসলিমের জন্য ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত, তবে তা অবশ্যই ইসলামি নীতিমালা ও সামাজিক দায়িত্বের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত। আনন্দ উদযাপনের নামে অশ্লীলতা ও অপব্যয় কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। বরং নববর্ষকে একটি আত্মশুদ্ধি ও ইতিবাচক পরিবর্তনের সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করা উচিত, যেখানে ব্যক্তি এবং সমাজের কল্যাণকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।