মুমিন-মুসলমানদের জন্য মৃত্যু পরবর্তী প্রথম ধাপ হলো- কবর। কবর থেকে পুনরুত্থান পর্যন্ত জীবনকে বলা হয় আলমে বারজাখ। বারজাখের ভয়াবহতা থেকে মুক্তি পেলে পরবর্তী পরীক্ষাগুলো হালকা হবে। হজরত উসমান (রা.) বলেন, আমি হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, ‘কবর হচ্ছে আখেরাতের প্রথম পর্ব। যে এর আজাব থেকে মুক্তি পাবে, তার জন্য পরবর্তী পর্বগুলো সহজ হয়ে যাবে। আর যে মুক্তি পাবে না, তার জন্য পরবর্তী ধাপগুলো আরো কঠিন হবে।’ -জামে তিরমিজি : ২৩০৮
বলা হয়, কারো কবর জাহান্নামের একটি গর্ত। কারোটা জান্নাতের একটি বাগিচা। কবরের আজাব কোরআন-সুন্নাহ ও ইজমা দ্বারা প্রমাণিত। দুই পাশের মাটির চাপ, সাপ-বিচ্ছুর দংশন, হাতুড়ি দিয়ে ফেরেশতাদের বিশাল আঘাত ও প্রজ্বলিত অগ্নির মতো ভয়ংকর শাস্তি আছে কবরে। -জামে তিরমিজি : ২৪৬০
তবে মুমিন বান্দার জন্য কবর হবে প্রশান্তির বিছানা। জান্নাতের বাগান। এক শান্তিময় ঘুমে কেটে যাবে তার বারজাখের জীবন। -মুসনাদ আহমদ : ১৮৫৩৪
কবরের আজাব থেকে বাঁচতে একজন মুসলমানকে প্রকৃত মুসলমানের জীবন গ্রহণ করতে হবে। সেই সঙ্গে কবর প্রসঙ্গে রেওয়ায়েতগুলো জেনে সে অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করতে হবে। সেগুলো হলো-
১. কবরে সেজদা করা হারাম। -সহিহ বোখারি : ১৩৩০
২. কবরকে মসজিদ বানানো হারাম। -সুনানে আবু দাউদ : ৩২২৭
৩. কবরের ওপর বসা ও নামাজ আদায় নিষিদ্ধ। -সহিহ মুসলিম : ২১৪০
৪. কবর পাকা করা ও মাজার বানানো হারাম। -সহিহ মুসলিম : ২১৩৫
৫. কবরের ওপর মোমবাতি জ্বালানো হারাম। -সুনানে নাসায়ি : ২০৪৩
৬. কবরের ওপর কোনো লেখা হারাম। -সুনানে আবু দাউদ : ৩২২৬
৭. কবরে ফলক লাগানো নিষেধ। -জামে তিরমিজি : ১০৫২
৮. কবরে চুনকাম করা নিষেধ।-সহিহ মুসলিম : ২১৩৫
৯. কবরের মধ্যে ওরস, মেলার আয়োজন করা এবং কবরকে উৎসবের স্থান বানানো হারাম। -সুনানে আবু দাউদ : ২০৪২
১০. কবরের পাশে পশু জবাই করা নিষেধ। -সুনানে আবু দাউদ : ৩২২২
১১. হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মসজিদে হারাম, মসজিদে আকসা ও মসজিদে নববি ছাড়া অন্যকোনো মসজিদে জিয়ারতের উদ্দেশ্যে সফর করা যাবে না। -সহিহ বোখারি : ১১৯৭
এই হাদিসের আলোকে কবর জিয়ারতের উদ্দেশ্যে সফরকে ইসলামি স্কলাররা নাজায়েজ বলেছেন।
১২. নারীদের জন্য কবর জিয়ারত করা নিষেধ। -জামে তিরমিজি : ১০৫৬