ঈদুল ফিতরে মুক্তি পেতে যাচ্ছে মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজের পরিচালনায় সিনেমা ‘ওমর’। যাতে অভিনয় করেছেন শরীফুল রাজ, শহীদুজ্জামান সেলিম, ফজলুর রহমান বাবু, নাসির উদ্দিন খানের মতো দেশের প্রভাবশালী অভিনেতারা। সিনেমাটির পোস্টার মুক্তি দেওয়া হয়েছে সম্প্রতি। এরপর থেকেই প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে সমাজমাধ্যমে। নেটিজেনদের প্রশ্ন, কি করে একটি সিনেমার নাম ‘ওমর’ হতে পারে?
সিনেমার নাম ‘ওমর’ রাখায় মুসলিমদের ভাবাবেগে আঘাত এসেছে বলে অসংখ্য নেটিজেন মন্তব্য করেছেন। তারা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সিনেমার নাম পরিবর্তনের জন্য সংশ্লিষ্টমহল ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
কেননা, ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)। তিনি খেলাফতের সময় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। মদিনায় হিজরতের পর যুদ্ধ, চুক্তি, বিধিবিধান প্রবর্তন, ইসলাম প্রচারের বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন- সব ঘটনায় রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে ওমর (রা.) সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। সেই মহান মনিষীর নামে সিনেমা হলে সেটি হওয়া উচিত ছিল তার জীবন কিংবা আদর্শকে ধারণ করে এমন কোন গল্প নিয়ে। কিন্তু একটি বাণিজ্যিক ঘরানার ছবি, যেখানে আইটেম গানে নারীকে অশ্লীলভাবে উপস্থাপনসহ ইসলাম পরিপন্থী বিভিন্ন বিষয়ের যোগসূত্র রয়েছে, সেই সিনেমার নাম কিছুতেই ‘ওমর’ হোক- এটা মেনে নেওয়া যায় না।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের জনপ্রিয় মুখ ওয়ালি উল্লাহ আরমান, মোহাম্মদ ফজলে এলাহী, রাহাত বিন আলম, আরিফ উল্লাহ আরিফীসহ অনেকেই বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেখানে নানা প্রশ্ন ও ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে।
ওয়ালি উল্লাহ আরমান লিখেছেন, ‘‘ওমর’ নাম শুনলেই বাতিলের (অসত্য) বুকে কাঁপন ওঠে, সাহসে বুক ফুলে ওঠে মুমিনের। ‘ওমর’-এর ইসলাম গ্রহণে মক্কার হাতেগোনা সাহাবির হিম্মত আকাশ ছুঁয়ে যায়। তাদের উচ্চকিত তাকবির ধ্বনিতে কেঁপে ওঠে মক্কার পাহাড় পর্বত। ‘ওমর’ হক এবং বাতিলের মাঝে পার্থক্যকারী। ‘ওমর’ অর্ধ জাহানের শাসক। ‘ওমর’ এমন মহামানব, কখনো কখনো যার সিদ্ধান্ত এবং মত আল্লাহ পছন্দ করেন। ‘ওমর’ এমন মানুষ, যার ব্যাপারে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব ও শেষ নবী বলেন, “আমার পরে যদি কেউ নবী হতো, সে হতো- ‘ওমর’।”
‘ওমর’ এমন এক সিংহ পুরুষ, মদিনায় বসে দেওয়া তার গর্জন শত শত মাইল দূরে থেকে শুনতে পেয়ে মুসলিম সিপাহসালার সতর্ক হয়ে যায়। উম্মতে মুসলিমার সেই দ্বিতীয় শীর্ষ মহান ব্যক্তির নামে নব্বইভাগ মুসলমানের দেশে অশ্লীল এবং সন্ত্রাসনির্ভর সিনেমা বানানো হয়। ঢাকঢোল পিটিয়ে পবিত্র রমজানের শেষ দিকে সাড়ম্বরে সেই সিনেমার সগৌরব প্রচারণা শেষে পবিত্র ঈদে মুক্তির দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হয়। আমি নিশ্চিত নই, ভারতেও ইসলামের এমন মহান ব্যক্তির নামে মিল রেখে সিনেমা নির্মাণ এবং মুক্তি দেওয়া সম্ভব কি-না!’