আমার মন অসম্ভব খারাপ। মক্কা ছেড়ে চলে যেতে হবে, এই বেদনায় হৃদয় ভারাক্রান্ত। প্রায় এক মাস পর আপনজনদের মাঝে ফিরে যাওয়ার আনন্দ আমায় স্পর্শ করছে না। আল্লাহর ঘরকে কীভাবে বিদায় জানাবো, ভাবতেই পারছি না। কাবা ছেড়ে যেতে এত কষ্ট হবে, সত্যিই ভাবিনি। আবার কখনও ভাগ্যে রাখলে ইনশাআল্লাহ আসবো। এ বরকতময় স্থানে অনেক অনেক দোয়া করা ও ক্ষমা চাওয়া উচিৎ। কিন্তু আবার এখানে ফিরে আসার জন্য দোয়া করা ছাড়া আর কিছু মাথায় আসছে না।
মিশরীয় নারী হাজি নাজমা আবদুহু হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষে দেশের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার আগে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বাসের উঠার আগে এভাবেই নিজের অনুভূতি প্রকাশ করছিলেন।
তিনি বলছিলেন, কাবাকে বিদায় জানানো তার পক্ষে খুব কঠিন ছিলো, এটা আমার জন্য একটি দুঃখজনক সময়।
সৌদি গণমাধ্যম আল-আখবারিয়ার সঙ্গে আলাপকালে মিশরীয় ওই নারী আরও বলেন, তিনি ১০ বছর আগে উমরা পালন করতে এসেছিলেন; এবারই প্রথম হজে এসেছেন। তখন এবং এখন সৌদি আরবে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। তবে মানুষের আবেগ আর কান্নার ভাষায় কোনো পরিবর্তন আসেনি।
আরও পড়ুন
ইশারা ও চাহনি যেখানে ভেঙে দেয় ভাষার বাধা
নাজমা আবদুহু বলেন, বায়তুল্লাহ নিজ চোখে না দেখা ও নিজের অন্তর দিয়ে এর অপার্থিব পবিত্রতা অনুভব করতে না পারা পর্যন্ত এর মাহাত্ম্য অনুধাবন করা সম্ভব নয়। জান্নাতে যারা যাবেন, তাদের জন্য শ্রেষ্ঠতম পুরষ্কার হবে মহান রবের দিদার লাভ। পৃথিবীতে আল্লাহর ঘর দেখে সবার মনে যে তীব্র ভালোলাগার অনুভূতি হয়, জান্নাতে যারা আল্লাহকে দেখবেন, তাদের তখন কেমন সুখানুভূতি হবে, তা আমাদের দুনিয়ার সীমাবদ্ধ জ্ঞান দিয়ে ধারণা করা সম্ভব নয় এবং সেই অপার আনন্দ অন্যকোনো অনুভূতির সঙ্গে তুলনা করাও অসম্ভব। কিন্তু পবিত্র কাবার দেখার পর হৃদয়ে যে প্রশান্তি অনুভব হয়, সেটা বলে প্রকাশ করা যাবে না।
হজ ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে তার অভিমত, হজ নিয়ে একটা ভয় ছিল, কিন্তু আল্লাহ আমাদের জন্য সহজ করে দিয়েছেন। এখন সৌদি সরকার মক্কায় আসা থেকে যাওয়া পর্যন্ত অত্যন্ত সহজ ও চমৎকার ব্যবস্থা করেছে। এ জন্য তারা অভিনন্দন পাওয়ার যোগ্য।