হঠাৎ ভারতের বাঁধ খুলে দেওয়ায় উজানের পানি ও ভারী বর্ষণে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা দেখল বাংলাদেশ। বিশেষত ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, চাঁদপুর, কুমিল্লাসহ অন্তত ১৩টি জেলার মানুষ বন্যায় অবর্ণনীয় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। আর এই ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন দেশের অসংখ্য মানুষ ও সংগঠন। পিছিয়ে নেই আলেম-ওলামা ও ইসলামি দাতব্য সংস্থাগুলো। এমনই একটি সংস্থা ‘আদ-দাওয়াহ বাংলাদেশ।’ উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতায় প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করে চলছে সংস্থাটি।
বন্যার পর পরই কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে অস্থায়ী ক্যাম্প করে ‘আদ-দাওয়াহ বাংলাদেশ ও মারকাযুল ফুরকান ফাউন্ডেশন’ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্ধার কার্যক্রম ও ত্রাণ বিতরণ শুরু করে। একইসঙ্গে এখানে তাদের সাথে যৌথভাবে বন্যার্তদের সেবায় কাজ করছে রেডিও একাত্তর ও ত্বোহা জিন্নুরাইন ফাউন্ডেশন।
ইতিমধ্যে ফাউন্ডেশনের কর্মীরা বন্যার ভয়াবহতার সময় হেলিকপ্টার দিয়ে উদ্ধার অভিযানসহ ভেসে আসা একাধিক লাশ দাফন করেছে। লাশগুলোর মধ্যে একজন শিশু, দুজন পুরুষ ও একজন নারী ছিলেন।
কুমিল্লার লাকসাম, মনোহরগঞ্জ, বুড়িচং, দেবিদ্ধার, চৌদ্দগ্রাম ক্যান্টনমেন্টসহ আশেপাশের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গত ছয় দিন ও নোয়াখালী মাইজদী তালিমুস সুন্নাহ মাদরাসায় একটি অস্থায়ী ক্যাম্প করে তিন দিন শুকনা ও রান্না করা খাবারের সমন্বয়ে ৫ থেকে ৬ হাজার লোকের খাবার বিতরণ ও পরশুরামে ৫ শতাধিক মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী প্যাকেট বিতরণ করা করেছে ‘আদ-দাওয়াহ বাংলাদেশ ও মারকাযুল ফুরকান ফাউন্ডেশন।’
আদ-দাওয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাওলানা মামুন চৌধুরী জানান, আদ-দাওয়া বাংলাদেশ, মারকাযুল ফুরকান ও রেডিও একাত্তরের যৌথ উদ্যোগে প্রতিদিন ৫-৬টি টিমে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে ধারাবাহিকভাবে ত্রাণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে- আলহামদুলিল্লাহ।
এ সময় তিনি বন্যা শেষে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন ও আর্থিক সহযোগিতায় দেশবাসীকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসারও আহবান জানান।
ত্রাণ তৎপরতা প্রসঙ্গে মারকাযুল ফুরকান ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মাওলানা মোশাররফ হোসাইন মাহমুদ বলেন, আমাদের পরবর্তী কার্যক্রম হলো- বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।
বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রমে বিশেষ অবদান রাখায় ভিক্টোরিয়া কলেজ মসজিদের খতিব মাওলানা মামুন মুস্তফী, নোয়াখালী মাইজদী তালিমুস সুন্নাহ মাদরাসার পরিচালক মাওলানা আব্দুল্লাহ ও মাওলানা গাজী আল মাহমুদ, মিডিয়া ব্যাক্তিত্ব মুফতি মুয়াবিয়া আল হাবিবি, মুফতি রফি উদ্দিন মাহমুদ নুরী, আশ-শরইয়্যা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুফতি মামুনুর রশিদ কাসেমী, মাওলানা ইমাদ উদ্দিন ও ত্বহা জিন্নুরাইন ফাউন্ডেশনের মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিসবাহকে বিশেষ শুকরিয়া জ্ঞাপন করেছেন আদ-দাওয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাওলানা মামুন চৌধুরী।
এ ছাড়া ত্রাণ কার্যক্রমে সর্বক্ষণ নিয়োজিত ছিলেন মাওলানা আবুল বাশার রেজওয়ান, মুফতি ফয়জুল্লাহ কুমিল্লা, মাওলানা ইয়াসিন মাহমুদ বরকতুল্লাহ, মাওলানা আহসানুল্লাহ জাকি, মাওলানা ইমদাদ হাফেজ মারূফ বিল্লাহ, হাফেজ আল-আমিন প্রমুখ।