বন্যাপরবর্তী পানিবাহিত রোগ বাড়ছে। ফলে ডায়রিয়া, কলেরা, টাইফয়েড, চুলকানি, জ্বর ঠাণ্ডাসহ হেপাটাইটিসের মতো রোগের সংক্রমণের শঙ্কা বাড়ছে। ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের পর্যাপ্ত সেবা নিশ্চিত করতে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হচ্ছে চিকিৎসাসেবা কেন্দ্রগুলোকে। এমন ক্রমবর্ধমান সংকটে প্রতিটি মহল্লা বা পাড়া, পরিবার, এমনকি ব্যক্তি পর্যায় থেকেও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস শুরু থেকেই ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল ক্যাম্প কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। গত ছয় দিনে পাঁচজন চিকিৎসকের সহযোগিতায় স্বেচ্ছাসেবীরা এ পর্যন্ত পাঁচ সহস্রাধিক পরিবারে চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় ঔষধসহ সেলাইন বিতরণের পাশাপাশি রক্তচাপ পরীক্ষা ও ডায়াবেটিসসহ প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পরীক্ষা করা হচ্ছে।
ফেনীর সহায়তা ক্যাম্পে দায়িত্বরত সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ-বায়তুল মাল সম্পাদক ও যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় সংগঠন বিভাগের সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান বলেন, আমাদের মেডিকেল টিম প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরে ঘুরে চিকিৎসা দেওয়ার অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে রিপোর্ট করেছে, আগামীতে চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা আরও প্রকট হবে। ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে আমাদের পুনর্বাসন পরিকল্পনায় চিকিৎসার জন্য পরিবার প্রতি ৫ হাজার টাকা করে বাজেট নির্ধারণ করা হয়েছে। আমরা সবার সার্বিক সহযোগিতায় এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করব- ইনশাআল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, ফেনীতে ক্যাম্প স্থাপন করে দীর্ঘমেয়াদি ত্রাণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। সহযোগী সংগঠনগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে ফেনীর আলিম উদ্দিন রোডস্থ সালাউদ্দিন চত্বর সংলগ্ন রাবেয়া লতিফ মার্কেটে ক্যাম্প স্থাপন করে তারা। সেখানে ‘দস্তরখানা’ নামে লঙ্গরখানা থেকে বন্যার্ত মানুষের মধ্যে রান্নাকৃত খাবার বিতরণ করা হয়।
সংগঠনের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক ত্রাণ কার্যক্রমের সংক্ষিপ্ত বিবরণ ও পরিকল্পনা উল্লেখ করে বলেন, ভয়াবহ বন্যা শুরু হয়ে মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হওয়ার পরপরই আমরা ত্রাণ প্রকল্প হাতে নেই। আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে সারাদেশ থেকে জনসাধারণ বিভিন্ন সহযোগিতা পাঠাতে থাকেন।
আগামীর পরিকল্পনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা পানি কমে যাওয়ার পর পুনর্বাসন কার্যক্রমের প্রকল্প হাতে নিয়েছি। গৃহ সামগ্রী, ঘর মেরামত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, চিকিৎসা ও কৃষি এই পাঁচ খাতে আমরা ত্রাণ সহায়তা প্রদান করব। গৃহ সামগ্রী ক্রয়ের জন্য প্রতি পরিবারকে তিন হাজার, ঘর মেরামতের জন্য ত্রিশ হাজার, শিক্ষা সামগ্রীর জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতি দশ হাজার, চিকিৎসা ও কৃষি খাতে পাঁচ হাজার করে প্রদানের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি।