সাধারণ জনগণের সহযোগিতার মাধ্যমেই মাদরাসাগুলো পরিচালিত হয়ে থাকে বলে জানিয়ে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, সামান্য বেতন-ভাতা দিয়েই মাদরাসার শিক্ষকেরা জীবিকা নির্বাহ করেন। মসজিদের ইমামরাও ঠিক একইভাবে সামান্য সম্মানীতে দিনাতিপাত করেন। উলামায়ে কেরাম আল্লাহতায়ালাকে রাজি-খুশি করার জন্যই তাদের দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বরইতলীতে জামিয়াতুল ইসলামিয়া ফয়জুল উলুম মাদরাসার হলরুমে আলেম-উলামাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ধর্ম উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
আলেমরা আলোর মিনার। তারা সমাজকে ইসলামের আলোয় আলোকিত করতে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন উল্লেখ করে ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, তারা মানুষের মাঝে মানবিক গুণাবলী জাগ্রত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। হিংসা-বিদ্বেষ, ঘৃনা, শ্রমের মর্যাদা প্রভৃতি বিষয়ে ইমামরা কথা বলেন। আমাদের সমাজে ইসলামি কালচার যতটুকু টিকে আছে তা এই ইমামদের মেহনতের কারণেই টিকে আছে।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, জনসম্পৃক্ততা আলেমদের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে। আলেমসমাজ সবসময় আল্লাহ ও রাসুলের কথা বলেন। তারা সাহাবায়ে কেরামদের কথা বলেন। একইসঙ্গে তারা দুর্নীতি, মাদক, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদসহ নানাবিধ সামাজিক ইস্যুতে কথা বলেন।
তিনি বলেন, কওমি মাদরাসাগুলোতে সরকারের কোনো অনুদান নেই। সম্পূর্ণভাবে সাধারণ জনগণের সহযোগিতার মাধ্যমেই এই মাদরাসাগুলো পরিচালিত হয়ে থাকে। সামান্য বেতন-ভাতা দিয়েই মাদরাসার শিক্ষকেরা জীবিকা নির্বাহ করেন। মসজিদের ইমামরাও ঠিক একইভাবে সামান্য সম্মানীতে দিনতিপাত করেন। উলামায়ে কেরাম আল্লাহতায়ালাকে রাজি-খুশি করার জন্যই তাদের দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
উপদেষ্টা বলেন, এই সরকারের মেয়াদ খুব কম। এই সময়ের মধ্যেই ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট হতে একটি মিনারেল ওয়াটার প্লান্ট করে যেতে চাই। এই ট্রাস্ট হতে ইমাম-মুয়াজ্জিনদেরকে কর্জে হাসানা বা সুদমুক্ত ঋণ দেওয়া হয়। এই ঋণের পরিমাণ আমরা বাড়াতে চাই।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে সাধারণত ঋণের টাকা মানুষ পরিশোধ করতে চায় না। কিন্তু ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্টের কোনো ঋণখেলাপি নেই। কারণ ইমামসমাজ এটাকে আমানত মনে করে থাকে, তারা আমানতের খেয়ানত করে না। উপদেষ্টা এ মাদরাসার উন্নয়নে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ রেজাউল করিম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে এ সভায় ধর্মসচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার বক্তৃতা করেন। এ সময় ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মু. আ. আউয়াল হাওলাদার, উপদেষ্টার একান্ত সচিব ছাদেক আহমদ, রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলাম, চকরিয়া সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার এম এম রকীব উর রেজা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পরে উপদেষ্টা উপজেলার হারবাং গ্রামে সুধী সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন।