আমরা অনেক সমস্যার সম্মুখীন, সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আমাদেরকে আত্মবিশ্বাস ও দৃঢ়তার সঙ্গে সম-সাময়িক ও আগামীর চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে হবে। আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের জন্য গৌরবের, আমাদের জন্য আলোকবর্তিকা। নৈতিকতা ও মূল্যবোধ প্রসারে ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভূমিকা অনস্বীকার্য।
সোমবার (২১ অক্টোবর) সকালে চট্টগ্রামের কুমিড়াতে আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় মিলনায়তনে দুই দিনব্যাপী ‘ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় ও সম-সাময়িক চ্যালেঞ্জ’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক কনফারেন্সের উদ্বোধনী বক্তৃতায় ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন এসব কথা বলেন।
মিশরের কায়রোর ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় লীগের সহযোগিতায় এ কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত মেধাবী। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গৌরবময় পাণ্ডিত্য ও পেশাগত দক্ষতা রয়েছে এবং তারা শুধু দেশীয় নয়, বিদেশি প্রসিদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে ডিগ্রী অর্জন করেছেন। আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জন্যও গৌরব বয়ে এনেছে।
ধর্ম উপদেষ্টা আরও বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনিময় প্রোগ্রাম রয়েছে। এখান থেকে পড়াশোনা করে তুর্কি, সৌদি আরব ও মালয়েশিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে উচ্চতর ডিগ্রী অর্জনের সুযোগ আছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর শিক্ষা অর্জনের মনোরম পরিবেশ বিরাজ করছে।
অনুষ্ঠানে আগত ইসলামি স্কলারদের উদ্দেশে ড. খালিদ বলেন, আমাদের বসে থাকলে চলবে না। অপার সম্ভাবনা আমাদেরকে হাতছানি দিচ্ছে। এ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যেসব শিক্ষার্থীরা বের হবে, তারাই আগামীদিনে পৃথিবীর নেতৃত্ব দেবে। এ কারণে আমাদেরকে ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েট বের করতে হবে। জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা ও চাহিদা, সেগুলো পূরণের জন্য ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের প্রয়োজন। আমরা এখানে শুধু সমস্যা নিয়ে আলোচনা করব না, সমাধানের পথও খুঁজে বের করব।
ড. খালিদ আরও বলেন, শিক্ষা ও সমাজের ইসলামিকরণে ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা রয়েছে এবং ইতোমধ্যে এসব ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। এই কনফারেন্স থেকে প্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশমালার মাধ্যমে আগামীর পথ সুগম হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সৌদি আরবের আন্তর্জাতিক ইসলামিক রিলিফ অর্গানাইজেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজ আল-মুসলেহ।
তিনি বলেন, আমরা অনেক স্বপ্ন নিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি একটি শ্রেষ্ঠতম বিদ্যাপীঠ হবে এবং এ অঞ্চলের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে। সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন আজ আমরা কিছুটা দেখতে পারছি। এখন আমাদের সামনে অনেক অনেক পথ বাকি। তিনি বক্তব্যে ইসলামের গৌরব ও ঐতিহ্য তুলে ধরেন এবং কোরআন ও সুন্নাহ যথাযথভাবে অনুসরণের অনুরোধ জানান।
আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলী আযাদীর সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন এ বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ড. এজেডএম ওবায়দুল্লাহ ও কায়রোর ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় লীগের অধ্যাপক ড. সামী মোহাম্মদ রাবী এল-শেরিফ।
এ ছাড়াও এমিরেটাস অধ্যাপক ও ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. একেএম আজহারুল ইসলাম, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর ড. মোহাম্মদ শামসুল আলম, জর্ডান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. নাথিয়ের মুফলেহ মুহাম্মদ ওবায়দাৎ ও অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল হক নদভি প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।