ধর্মপ্রাণ বিবেচনায় সরকারি খরচে আরও ১৩৪ জনকে পবিত্র হজপালনের জন্য সৌদি আরব পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
বুধবার (১০ জুলাই) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব (হজ) আব্দুল্লাহ আরিফ মোহাম্মদ স্বাক্ষরিত প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে সরকারি খরচে তাদের হজপালনের সম্মতির কথা জানা গেছে।
হজ প্যাকেজ-২ এর আওতায় নির্বাচিতরা আগামী ২৯ জুলাই (ফ্লাইটপ্রাপ্তি সাপেক্ষে) সৌদি আরব যাবেন ও ১০ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরবেন।
এর আগে ১ জুলাই ১৭৪ জনকে হজে পাঠানোর তালিকা প্রকাশ করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। সে হিসেবে চলতি বছর ৩০৮ জন সরকারি খরচে হজপালনের সুযোগ পেলেন।
এবারের তালিকায় খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, স্কুলের প্রধান শিক্ষক, সাংবাদিক, সংসদ সচিবালয়ের সহকারী এস্টেট অফিসার, কলেজের প্রিন্সিপাল, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অফিস সহায়ক, উপসচিব, গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রকোশলী, বাংলাদেশ স্কাউটসের উপ কমিশনার, রোভার স্কাউট গ্রুপের সদস্য, অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা, বিভিন্ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের নাম রয়েছে।
হজযাত্রীদের পরামর্শ দিতে ৫৫ আলেমকে সৌদি পাঠাচ্ছে সরকার
চিঠিতে বলা হয়েছে, তাদের ভ্রমণ ব্যয় চলতি অর্থবছরে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ‘বাংলাদেশের বাইরে হজ বাবদ ব্যয়’ খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে বহন করা হবে। খাবার খরচ ৩০ হাজার টাকা ছাড়া অন্য কোনো ব্যয় অথবা ভাতা প্রাপ্য হবেন না। খাবার খরচের ৩০ হাজার টাকার মধ্যে মক্কার খাবার খরচ বাবদ ৯ হাজার ৪৫০ টাকা কেটে রেখে অন্য ২০ হাজার ৫৫০ টাকা ঢাকার আশকোনা হজ অফিস থেকে নগদ প্রদান করা হবে।
হজে চিকিৎসকদের সহায়ক গানম্যান-গাড়িচালক!
তালিকায় থাকা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সৌদি আরবে অবস্থানকালে নিজ নিজ কর্মস্থল থেকে বাংলাদেশের স্থানীয় মুদ্রায় বেতনভাতা প্রাপ্য হবেন।
রাষ্ট্রীয় খরচে হজপালনকারীদের কোরবানি বাবদ আনুমানিক ৪৯০ রিয়াল অথবা সমপরিমাণ বাংলাদেশি অর্থ নিজ দায়িত্বে বহন করতে হবে। ভিসা গ্রহণের জন্য তাদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও টিকা গ্রহণ করতে হবে।
রাষ্ট্রীয় খরচে হজপালনের জন্য অনুমোদিতদের পাসপোর্টের মেয়াদ ২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত থাকতে হবে। তালিকায় থাকা কেউ বিগত বছরে রাষ্ট্রীয় খরচে হজপালন করে থাকলে তার নাম স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল বলে গণ্য হবে। যে সব ব্যক্তি বিগত ২০১৬, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে হজপালন করেছেন অথবা ভিসা প্রাপ্ত হয়েছিলেন কিন্তু হজে যাননি এমন কেউ সরকারি খরচে হজপালনের জন্য মনোনীত হয়ে থাকলে, তাদের জন্য সৌদি সরকার কর্তৃক আরোপিত ভ্যাটসহ অতিরিক্ত চার্জ ২ হাজার ১০০ সৌদি রিয়াল সমপরিমাণ অর্থ পরিশোধ করতে হবে।
এবার সরকারি খরচে হজে যাচ্ছেন ১৭৪ জন
এদিকে এবারই প্রথমবারের মতো সৌদি আরবে বাংলাদেশি হজযাত্রীদের হজপালন বিষয়ে ধর্মীয় পরামর্শ ও দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য ৫৫ সদস্য বিশিষ্ট উলামা-মাশায়েখদের একটি দল গঠন করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। রাষ্ট্রীয় খরচে হজযাত্রীদের প্যাকেজে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদান সাপেক্ষে উলামা-মাশায়েখদের দলটি হজপালন করবেন।
আলেমদের এই দল ছাড়াও বাংলাদেশি হজযাত্রীদের জেদ্দা, মক্কা ও মদিনায় সহায়তা করতে সরকার বেশ কয়েকটি টিম গঠন করে সৌদি আরব প্রেরণ করেছে। দলগুলো হলো- হজ চিকিৎসক দল, হজ প্রশাসনিক দল, হজ কারিগরি দল ও হজ চিকিৎসক দলের সহায়ক দল।