দানবাক্স থেকে পাগলা মসজিদের দৈনিক আয় লাখ টাকা!

, ইসলাম

ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 00:53:02

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের আটটি দানবাক্স আবারও খোলা হয়েছে। এবার দানবাক্স খুলে ৮৮ লাখ ২৯ হাজার ১৭ টাকা পাওয়া গেছে।

শনিবার (৭ জুলাই) জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে তিন মাস সাতদিনের ব্যবধানে দানবাক্সগুলো খোলা হয়।

নিয়ম অনুযায়ী তিন মাস পরপর মসজিদের দানবাক্সগুলো খোলা হয়। এবার তিন মাস সাতদিন পর খোলা হয়েছে। দানবাক্সে পাওয়া টাকা রূপালী ব্যাংকে জমা রাখা হয়েছে, আর যে স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গেছে তা আগের পাওয়া স্বর্ণালঙ্কারের সঙ্গে যোগ করে সিন্দুকে রেখে দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ ৩১ মার্চ মসজিদের দানবাক্স খুলে গণনা করে ৮৪ লাখ ৯২ হাজার টাকা পাওয়া যায়। এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে মসজিদের আটটি দানবাক্স থেকে ১ কোটি ২৭ লাখ ৩৬ হাজার ৪৭১ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। যা ছিল পাগলা মসজিদের দানবাক্স থেকে সর্বোচ্চ টাকাপ্রাপ্তির ঘটনা।

দানবাক্সের টাকা ছাড়াও দানে পাওয়া গরু-ছাগল, হাস-মুরগি প্রতি সপ্তাহের নির্ধারিত দিনে নিলামে বিক্রি করা হয়।

এক হিসেবে দেখা গেছে, নানা প্রকারের দান থেকে প্রতিদিন মসজিদটির আয় গড়ে প্রায় এক লাখ টাকা।

আরও পড়ুন: শ্রেষ্ঠ আমল হজ, বিনিময়ে জান্নাত

কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পশ্চিম প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে আনুমানিক চার একর জায়গায় ‘পাগলা মসজিদ ইসলামী কমপ্লেক্স’ অবস্থিত। প্রায় আড়াইশ’ বছর আগে মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত হয় বলে ইতিহাস সূত্রে জানা যায়। এই মসজিদের প্রতিষ্ঠা নিয়ে অনেক কাহিনী প্রচলিত আছে।

জনশ্রুতি আছে, পাগলবেশী এক আধ্যাত্মিক পুরুষ খরস্রোতা নরসুন্দা নদীর মধ্যস্থলে মাদুর পেতে ভেসে এসে বর্তমান মসজিদের কাছে এসে উপস্থিত হন এবং ধীরে ধীরে তাকে ঘিরে আশেপাশে অনেক ভক্ত সমবেত হন। ওই পাগলের মৃত্যুর পর তার সমাধির পাশে পরবর্তীতে এই মসজিদটি গড়ে উঠে। কালক্রমে মসজিদটি ‘পাগলা মসজিদ’ নামে পরিচিতি পায়।

সাধারণ মানুষের বিশ্বাসমতে, এই মসজিদে যে কেউ পবিত্র নিয়তে কিছু দান-খয়রাত করলে বা নফল নামাজ আদায় করার পর ‘মানত’ করলে মনের আশা পূরণ হয়। এজন্য শত শত মানুষ প্রতিদিন এই মসজিদে আসেন। এমন বিশ্বাসের আলোকে পাগলা মসজিদে গরু-খাসি এবং প্রচুর স্বর্ণ অলংকারসহ প্রচুর টাকা দান-খয়রাত করেন সাধারণ মানুষ।

মসজিদের ব্যয়ে ২০০২ সালে মসজিদের পাশেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি হাফেজিয়া মাদরাসা। মসজিদটি পরিচালিত হয় জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে। দানবাক্সের প্রাপ্ত অর্থে মসজিদ ও কমপ্লেক্সের অন্তর্ভুক্ত এতিমখানা, মাদরাসা, কবরস্থানের ব্যয় নির্বাহ ছাড়াও জেলার অন্যান্য মসজিদ, মাদরাসা, এতিমখানাসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এবং দুস্থ মানুষকে সহায়তা প্রদান করা হয়।

তিনতলা ও তিন গম্বুজবিশিষ্ট পাগলা মসজিদের সুউচ্চ মিনার বহুদূর থেকে নজরে আসে। অনেক পুরোনো না হলেও পাগলা মসজিদের ইমরাত খুবই সুন্দর এবং নির্মাণশৈলীও বেশ চমৎকার। আধুনিক স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত পাগলা মসজিদটি নানা ধরণের ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থাপনা হিসেবে খ্যাত।

এ সম্পর্কিত আরও খবর