৮ হাজার কিলোমিটার হেঁটে ফ্রান্স থেকে মদিনায়
এক ফরাসি নাগরিক পবিত্র উমরা পালনের জন্য ফ্রান্স থেকে হেঁটে আট মাসে মদিনায় পৌঁছেছেন। পথে অতিক্রম করেছেন ১৩টি দেশ, পাড়ি দিয়েছেন ৮ হাজার কিলোমিটার পথ।
বুধবার (১৫ মে) মদিনায় সৌদি প্রেস এজেন্সিকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে মুহাম্মদ বুলাবিয়ার জানান, এই দীর্ঘ পথ হেঁটে পাড়ি দেওয়ার জন্য দুই বছর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। বর্তমানে তিনি মদিনায় অবস্থান করছেন, তিনি এখন মক্কায় হেঁটে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
মক্কায় পৌঁছে তিনি পবিত্র উমরার আনুষ্ঠানিকতা শেষ করবেন। পরে হজের অপেক্ষায় মক্কায় অবস্থান করবেন। মদিনায় তিনি নবী কারিম (সা.)-এর রওজা মোবারক জিয়ারত করে পথের সব ক্লান্তি ভুলে গেছেন বলেও জানান।
তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল। আমি পায়ে হেঁটে মক্কায় পৌঁছাব। মদিনায় আসার পর মনে হয়, আমি গত আট মাস পথে ছিলাম। মদিনার পরিবেশ আমাকে সম্পূর্ণরূপে সতেজ করে তুলেছে।
ফরাসি পর্যটক মুহাম্মদ বুলাবিয়ার গত বছরের ২৭ আগস্ট প্যারিসের আইফেল টাওয়ার থেকে যাত্রা শুরু করেন। সৌদি আরব পৌঁছানোর আগে তিনি সুইজারল্যান্ড, ইতালি, স্লোভেনিয়া, ক্রোয়েশিয়া, বসনিয়া, মন্টিনিগ্রো, আলবেনিয়া, মেসিডোনিয়া, গ্রীস, তুর্কিয়ে এবং জর্ডান পাড়ি দিয়েছেন।
ফরাসি নাগরিক মুহাম্মদ বুলাবিয়ারের বাবা তিউনিসিয়ান এবং মা মরক্কোর।
দীর্ঘপথে তার সঙ্গী ছিল একটি মানচিত্র এবং একটি ব্যাগ। যেখানে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ছিল, অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে একটি তাঁবুও তিনি বহন করেছেন। সবমিলিয়ে ২৫ কেজির একটি ব্যাগ তিনি প্যারিস থেকে বহন করেছেন।
বুলাবিয়ার জানান, তিনি বেশিরভাগ রাত রাস্তার পাশের মসজিদে কিংবা উদার অপরিচিতদের সঙ্গে কাটিয়েছেন।
পথের লোকজনের মনোভাব সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি যেখানেই গেছি সেখানেই তারা আমাকে উৎসাহের সঙ্গে স্বাগত জানিয়েছে এবং অগাধ সম্মান দিয়েছে। অনেকে তাদের বাড়িতে থাকার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। সৌদি নাগরিকরা খুবই অতিথি পরায়ণ।
পথের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে বুলাবিয়ার বলেন, যাত্রার সবচেয়ে কঠিন অংশ ছিল আবহাওয়া। ‘আমি অল্প সময়ে আবহওয়ার কয়েকটি রূপ দেখার সুযোগ পেয়েছি। আমি যখন দেশ ছেড়েছিলাম তখন গরম ছিল। পথে বসন্ত ঋতু চলে গেল, শীত ও শরৎ ঋতু পেরিয়ে যখন গ্রিসের সীমান্তে পৌঁছলাম- তখন প্রচণ্ড তুষার ঝড়ের সম্মুখীন হতে হলো। ফলে দুই সপ্তাহ যাত্রা বন্ধ রাখতে হয়।’