সম্প্রতি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগ এক বিজ্ঞপ্তিতে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ গমনেচ্ছুদের ১ মার্চ হতে ১৫ মার্চের মধ্যে চূড়ান্ত নিবন্ধন সম্পন্ন করার নির্দেশনা দিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, হজের চূড়ান্ত নিবন্ধনের সময় মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) থাকতে হবে।
নিবন্ধনের নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে পাসপোর্ট না পেলে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন না হজ গমনেচ্ছুরা। এদিকে চার থেকে পাঁচ মাস আগে পাসপোর্টের আবেদন করে এখনও পাসপোর্ট হাতে না পাওয়ায় হজের চূড়ান্ত নিবন্ধন নিয়ে শঙ্কা আর চরম উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন অসংখ্য প্রাক-নিবন্ধনকারী।
মঙ্গলবার (১০ মার্চ) দুপুরে ময়মনসিংহ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের হজসেবা কেন্দ্রে দেখা মেলে কয়েকজন হজযাত্রীর। কথা হয় ময়মনসিংহ নগরের বাসিন্দা আরিফা সুলতানার সঙ্গে। তিনি ও তার স্বামী গিয়াস উদ্দিন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছিলেন সেই অক্টোবর মাসে। এরপর এখানে এসেছেন চার থেকে পাঁচবার। কিন্তু এখনও হাতে পাননি কাঙ্খিত পাসপোর্ট।
আরিফা সুলতানা বলেন, নিয়ম অনুযায়ী সাধারণ পাসপোর্টের ক্ষেত্রে ২১ কর্মদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট সরবরাহ করার কথা থাকলেও অজ্ঞাত কারণে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা পাসপোর্ট হাতে পেলাম না। এখন আমাদের বলা হয়েছে, পাসপোর্ট প্রিন্টিংয়ে আছে, ঢাকায় গিয়ে আনতে।
তার মতো একই অবস্থা ময়মনসিংহ সদরের মো. ইউনুস, নান্দাইল উপজেলার ফিরোজ মিয়া ও আব্দুল আজিজসহ অসংখ্য হজযাত্রীর। ফিরোজ মিয়া বলেন, আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে আমাকে বলা হয়েছিল ঢাকা থেকে আনতে হবে আমার পাসপোর্ট। এরপর আমি ঢাকার আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে গিয়েও দিনভর অপেক্ষা করে ফিরে আসতে হয়েছে। এদিকে সময় শেষ হতে চলল, কিভাবে নিবন্ধন করবো সেটা নিয়ে বড়ই দুশ্চিন্তায় আছি। ১৫ তারিখের মধ্যে যদি পাসপোর্ট হাতে না পাই তাহলে তো আর হজে যাওয়াই হবে না।
হজযাত্রী নিবন্ধন প্রক্রিয়া নিয়ে হজ এজেন্সিগুলোও পড়েছে বিপাকে। সময়মতো পাসপোর্ট সরবরাহ করতে না পারায় হজ যাত্রীদের সৌদি আরবে পাঠানো নিয়ে তারাও শঙ্কায় ভুগছেন। ময়মনসিংহের সাদমান ট্রাভেলস নামে একটি হজ এজেন্সির স্বত্ত্বাধিকারি মো. হাসানুজ্জামান জানান, তার এজেন্সিতে প্রাক-নিবন্ধন করা এখনও প্রায় ৫০ জনের পাসপোর্ট প্রস্তুত হয়নি। একই রকম অবস্থা কাজী ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস নামে আরেক এজেন্সির। ওই এজেন্সির স্বত্ত্বাধিকারি মো. হাফিজুল হক সরকার জানান, তার এজেন্সিরও ৫০ ভাগ যাত্রী হাতে পায়নি পাসপোর্ট। তারা ভোগান্তির বিষয়টি বিবেচনা করে ধর্ম মন্ত্রণালয়কে নিবন্ধনের সময় বৃদ্ধির আহবান জানান।
এদিকে ময়মনসিংহ পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক মাহমুদুল হাসান বলছেন, একজন হজযাত্রীও পাসপোর্ট পাওয়া থেকে বাদ যাবে না। এ বিষয়টি ঊর্ধ্বতন মহল সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদারকি করছে।
তিনি বলেন, হজযাত্রী যারা এ অফিসের সেবাকেন্দ্রে আসছেন তাদের প্রত্যেকের সঙ্গেই আমি কথা বলছি। তাদের দ্রুত পাসপোর্ট দিতে আমি ঢাকায়ও যোগাযোগ করছি। প্রায় সবাইকে ঢাকা থেকে পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে বলা হচ্ছে। যাদের সেখানে যেতে কষ্ট হবে বা অক্ষম তাদেরটা আমরাই সরবরাহ করছি। আশা করছি, একজনও নিবন্ধন করা থেকে বঞ্চিত হবেন না।