‘কুঁড়িতে বুড়ি আর চল্লিশে চালশে’ এই প্রবাদগুলোই এখন চিরাচারিত সত্য। বয়স বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে শরীর ও মনে পরিবর্তন আসে। আর এই পরিবর্তনগুলো মেনে নেওয়াই ভালো থাকার মূলমন্ত্র। নারী এবং পুরুষের শরীরের গঠনে বেশকিছু পার্থক্য রয়েছে। পুরুষদের তুলনায় মেয়েদের শরীর অনেক বেশি জটিল। এ কারণেই নারীদের বেশি করে নিজেদের খেয়াল রাখা উচিত।
বয়স চল্লিশের কোঠায় পৌঁছালে নারীরা বেশ কিছু সমস্যার মুখোমুখি হয়। তাই এটা সাবধানতার সময়, নিজের দিকে আলাদা করে নজর দেওয়ার সময়। এসময় তাই প্রাত্যহিক জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনুন।
সাধারণত প্রসবকালীন এবং প্রসব পরবর্তী সময় বা মনোপজের পরে প্রস্রাব নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার সমস্যাটা দেখা যায়। এমনকি কখনও কখনও জোরে কাশি দিলে বা উচ্চস্বরে হাসলেও প্রস্রাব আটকে রাখা দায় হয়ে পড়ে। চল্লিশ বছর পার করা নারীদের ক্ষেত্রে এমন বিব্রতকর পরিস্থিতির ঘটনা ঘটে প্রায় ৪০ শতাংশ।
পরামর্শ: এই যন্ত্রণাদায়ক পরিস্থিতি থেকে বের হতে যোগ ব্যায়াম করতে পারেন।
চল্লিশ বছর পর বা মনোপজের পর নারীর জীবন-জীবিকায় বিশাল এক পরিবর্তন ঘটে। যেমন- ছোট ছোট বিষয়গুলো ভুলে যাওয়া। তবে এটাকে স্মৃতিভ্রষ্টের রোগ মনে করার কোনো কারণ নেই। কারণ এসবই মনোপজের জন্য হয়।
পরামর্শ: বিষয়টি মনের মধ্যে পুষে না রেখে চিকিৎসককে জানিয়ে নিশ্চিত হয়ে নিন যে এটা অন্য কোনো রোগ নয়।
মানুষ মাত্রই কমবেশি চুল পড়ার বিষয়টি মোকাবিলা করতে হয়। কখনও বেশি কখনও কম। গর্ভাবস্থায় নারীদের চুলের স্বাস্থ্য বৃদ্ধি পায়। আবার শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরই ঝরতে থাকে। হরমোনাল পরিবর্তনে যেমন চুল পড়ে আবার মনোপজের কারণেও চুল পড়তে পারে।
পরামর্শ: এসব ক্ষেত্রে চুলপড়া কমাতে সহায়ক শ্যাম্পু ব্যবহার করুন বা ভিটামিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম যুক্ত খাদ্য গ্রহণ করুন।
চল্লিশের পর থেকে নারীর শারীরিক সক্ষমতা কমতে শুরু করে। বিভিন্ন পুষ্টি ও আয়রনের ঘাটতি দেখা দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শরীর এত মাত্রায় ক্লান্ত হয়ে পড়ে যে, কোনো কাজ করতেই মন চায় না। অসুস্থতার মাত্রাও বেড়ে যায়।
পরামর্শ: এমনটা যাতে আপনার সঙ্গে না ঘটে, তা সুনিশ্চিত করতে প্রতিদিনকার ডায়েটে মাংস, ডিম, নানাবিধ বীজ, বাদাম এবং ব্রাউন রাইসের মতো আয়রন সমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে।
চল্লিশের পর থেকে নারীদের হাড়ের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটতে শুরু করে। তাই এই সময় বেশি করে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া শুরু করতে হবে। সেই সঙ্গে সকালে গায়ে রোদ লাগাতে হবে। এতে শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি দূর হবে। ফলে হাড় ভালো থাকবে।
পরামর্শ: ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে নিয়মিত। ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবারগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- দুধ, দই, পনির, ব্রকলি, বাদাম প্রভৃতি।