ইনভিসালাইন পদ্ধতি নিয়ে প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা

  • লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ইনভিসালাইন চিকিৎসা পদ্ধতি / ছবি: পিক্সাবে

ইনভিসালাইন চিকিৎসা পদ্ধতি / ছবি: পিক্সাবে

দাঁত আমাদের শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং কিছুটা স্পর্শকাতর অঙ্গ। দাঁতের মাধ্যমে খাবার চিবিয়ে খেতে হয় বিধায়, পরিপাকেও পরোক্ষভাবে দাঁতের ভূমিকা থাকে। যেকোনো বয়সের মানুষেরই দাঁতের নানা সমস্যায় পড়তে দেখা যায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দাঁতের চিকিৎসাও সহজ এবং ব্যথাহীন পদ্ধতির উদ্ভাবন হয়েছে।

আঁকাবাঁকা দাঁতের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে চিকিৎসক ব্রেস পড়ানোর পরামর্শ দেন। এই ব্রেসেস করানো পদ্ধতি অনেক কষ্টকর সময় হয়। কারণ এতে ব্যথা লাগে। ব্রেসেস করানোর পরও নানরকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই অনেকেই ব্রেস পড়তে ভয় পান।

বিজ্ঞাপন
ইনভিসালাইন চিকিৎসা পদ্ধতি / ছবি: সংগৃহীত

তবে এখন ব্রেসেস পড়ানোর বিকল্প রয়েছে, ইনভিসালাইন পদ্ধতি। এই পদ্ধতি ব্রেসেসের চেয়ে কম ব্যথা এবং ঝামেলাযুক্ত। তবে কথায় বলে, মানুষ দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বোঝে না। আধুনিক এই চিকিৎসা পদ্ধতি এখন সহজলভ্য হলেও, দাঁতের ইনভিসালাইন চিকিৎসার ক্ষেত্রে অনেকেই দ্বিধায় পড়ে যায়। এমনিতেই অনেকে দাঁতের চিকিৎসায় ব্রেস পড়ানোকে ভয় পায়। তারপরে আবার নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি আসলেই কাজ করবে কিনা-সেই শঙ্কাও থাকে। তার উপর আছে কিছু জনপ্রিয় ভ্রান্তধারণা। যেমন:

 ১. কার্যকরিতা: ইনভিসালাইন সম্পর্কিত সবচেয়ে ভ্রান্ত ধারণা হলো, এই চিকিৎসা পদ্ধতি দাঁতে সামান্য সমস্যার জন্য নেওয়া হয়ে থাকে। এই ধারণা পুরোপুরি ভুল। আন্ডারবাইট, ক্রসবাইট, ওভারবাইটের মতো দাঁতের জটিল সমস্যা সমাধানের ক্ষমতাও আছে ইনভিসালাইনের। কাস্টম মেড অ্যালাইনারের মাধ্যমে এই ইনভিসালাইন তৈরি করা হয়। এর ফলে ধীরে ধীরে দাঁতের স্থান পরিবর্তন হতে থাকে।

বিজ্ঞাপন

২. সময়সাপেক্ষ: অনেকে মনে করেন ধাতুর ব্রেসেসের তুলনায় ইনভিসালাইন চিকিৎসায় সময় বেশি লেগে যায়। এই ধারণা তো সত্যি নয়ই, বরং কিছূক্ষেত্রে ইনভিসালাইনের কার্যকারিতা ব্রেসেসের চেয়ে দ্রুত হওয়ার ঘটনা দেখা যায়। বিশেষক্ষেত্র বাদ দিলে, সাধারণত ১২ থেকে ১৮ মাস সময় লাগে এই চিকিৎসাপদ্ধতিতে। কারো ক্ষেত্রে এরচেয়েও কম সময় লাগে। সমস্যা বেশি জটিল হলে আরও বেশি সময়ও লাগতে পারে।

ইনভিসালাইন চিকিৎসা পদ্ধতি / ছবি: সংগৃহীত

৩. খাবারে স্বাধীনতা: অনেকে মনে করেন ইনভিসালাইন পরে সব ধরনের খাবার খাওয়া যায়। এই কথাটা পুরোপুরি না হলেও, আংশিক সত্য বটে! খাবারের ক্ষেত্রে অন্তত ব্রেসেসের তুলনায় বেশি স্বাধীনতা থাকে ইনভিসালাইনের বেলায়। যদিও সেজন্য কিছু নির্দেশনা মেনে চলতে হয়।

যা ইচ্ছা তাই খেতে পারবেন, তবে আগে অ্যালাইনার গুলো খুলে নিতে হবে। আবার সেগুলো পরার আগে ভালো করে দাঁত মেজে পরিষ্কার করে নিতে হবে। ব্রেসেস পরার ক্ষেত্রে শক্ত এবং আঠালো খাবার খাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা থাকে। এক্ষেত্রে সেরকম কঠোর নিষেধাজ্ঞা নেই।

৪. খরচ:  অনেকে ইনভিসালাইন চিকিৎসা করাতে দ্বিধাবোধ করেন। তারা মনে করেন, এই চিকিৎসা বেশ খরচসাপেক্ষ। এটা অবশ্য রোগীর দাঁতের অবস্থার উপর নির্ভর করে। তবে বেশিরভাগ ইনভিসালাইন এবং ব্রেসেস পদ্ধতির খরচ কাছাকাছি বা প্রায় সমানই হয়।

খরচের ব্যাপারটি বিভিন্ন জিনিসের উপর নির্ভর করে। যেমন, দাঁতের জটিলতা এবং কতদিন যাবত চিকিৎসাধীন থাকতে হচ্ছে সেই সময়ের উপর। তাই খরচ নিয়ে মনে শঙ্কা থাকলে আগেই দন্ত চিকিৎসকের সঙ্গে ভালোভাবে এই ব্যাপারে আলোচনা করে নেওয়া ভালো।

ইনভিসালাইন চিকিৎসা পদ্ধতি / ছবি: সংগৃহীত

৫. ব্যথাদায়ক: সত্যি বলতে দাঁতের চিকিৎসায় যেকোনো পদ্ধতিই অস্বস্তিকর। তবে ইনভিসালাইন ব্যথাদায়ক চিকিৎসা পদ্ধতি এই ধারণা একেবারেই ভুল। বরং ব্রেসেস পদ্ধতির ব্যথা কমানোর উদ্দেশ্যেই ইনভিসালাইন পদ্ধতি আনা হয়। অ্যালাইনার এমনভাবেই ডিজাইন করা হয়েছে যেন তা মাড়ি বা গালে কোনো আঘাত সৃষ্টি করতে না পারে। প্রথম প্রথম বেশ কিছুটা অস্বস্তি অনূভূত হয়। তবে বেশিরভাগ ব্যবহারকারী মতামত দেন ২-১ দিন পরই এই অসুবিধা কেটে যায়।         

তথ্যসূত্র: মেডিক্যাল রিসার্চ.কম