আয়তাকার এই যন্ত্রের মাঝেই যেন আটকে গেছে আমাদের পুরো দুনিয়াটা। সারাদিনের নির্ভরতা, কাজ, আনন্দ ও বিনোদনের মাধ্যম মোবাইল ফোনকে অবহেলা করার কোন অবকাশ নেই।
যতই জরুরি হোক না কেন এই যন্ত্রটি, অতিরিক্ত ব্যবহার মোটেও কল্যানকর নয় আমাদের জন্য। শুধু শারীরিক নয়, মানসিক স্বাস্থ্যের উপরেও মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার নেতিবাচক প্রভাব ফেলে দেয়।
ভাবছেন এতো উপকারি একটি যন্ত্র কী ধরণের নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে? এখানে এমন পাঁচটি নেতিবাচক প্রভাবের উপরে আলোকপাত করা হলো।
নিয়ম হলো মোবাইল ফোন সুইচড অফ করে টেবিলে রেখে এরপর ঘুমাতে যাওয়া। কিন্তু এই নিয়মটি মেনে চলেন এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। আপাতদৃষ্টিতে খুবই সাধারণ একটি অভ্যাস মনে হলেও, ঘুমের উপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলে দেয় এই অভ্যাসটি। মোবাইলের শর্ট-ওয়েভ লেন্থ ও উজ্জ্বল নীল আলো ঘুমের চক্রে ব্যাঘাত ঘটানোর সঙ্গে চোখের উপরেও মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এই সকল কারণে দেখা দেয় নিদ্রাহীনতার সমস্যা।
ঘুমের সময়ের কথা তো গেলো, এখন আসা যাক জেগে থাকা সময়ের কথায়। সারাদিনে মোবাইলে ছোট্ট একটি ‘টিং’ কিংবা ভাইব্রেশন মনোযোগকে সম্পূর্ণ নষ্ট করে দিতে পারে। যে কারণে পরামর্শ দেওয়া হয়, জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ কোন কাজের সময় মোবাইল ফোনটিকে সাইলেন্ট মুডে রাখার জন্য।
কারোর সাথে চ্যাটিং করা শুরু করলে কতক্ষণ সময় মোবাইল হাতে ধরে থাকা হয় সেটা কি কখনো খেয়াল করেছেন? লম্বা সময় হাতে মোবাইল ধরে থাকার ফলে দেখা দেয় ‘সেলফি এলবো’র সমস্যা। একই ভঙ্গীতে কনুই বাঁকা করে দীর্ঘ সময় মোবাইল ধরে রাখার ফলে এই সমস্যাটি দেখা দেয়। এমনকি আঙ্গুলেও প্রবল ব্যথাভাব দেখা দেয় এই একই কারণে।
জানেন কি আপনার হাতে ধরে থাকা মোবাইলটিতে কি পরিমাণ জীবাণু আছে? ইউনিভার্সিটি অফ এরিজোনার মাইক্রোবায়োলজিস্ট চার্লস জেরবা জানান, বাথরুমের চাইতে দশগুণ বেশি জীবাণু রয়েছে আপনার প্রিয় মোবাইল ফোনটিতে। যে কারনে জেরবা পরামর্শ দিয়েছেন কিছুক্ষণ পরপর গ্যাজেট ফ্রেন্ডলি নরম ও পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মোবাইল ফোন পরিষ্কার করার।
ইদানিং যেখানেই যাওয়া হয় ছবি তোলা যেন বাধ্যতামূলক। আমরা ধরেই নেই, প্রতিটি মুহূর্তের ছবি তোলার মাধ্যমে সেই মুহূর্তটিকে ধরে রাখা সম্ভব হয়। বিষয়টি যে ভুল তা নয়। তবে প্রতিটি মুহূর্তের ছবি ধারণ করার মাঝে, সেই মুহূর্তটিকে উপভোগ করতেই আমরা ভুলে যাই। কোন একটা নতুন স্থানে গিয়ে আমরা যদি আশেপাশের পরিবেশ ও নতুন দৃশ্য উপভোগ না করে, শুধু মোবাইলের ক্যামেরার ফ্রেমেই নিজেদের মনোযোগ আটকে রাখি তবে নতুন স্থানটির কোন বিশেষ স্মৃতিই আমাদের মাথায় থাকবে না।