করোনার ঝুঁকি হ্রাসে ডায়াবেটিস রোগীদের যেসব পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা

স্বাস্থ্য, লাইফস্টাইল

নাছরিন আক্তার উর্মি, বার্তা২৪.কম | 2023-08-24 03:08:53

বিশ্বজুড়ে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। প্রতিনিয়ত আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছেই। ডায়াবেটিস, হার্টের সমস্যা, স্থুলত্ব এবং দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগীরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) জানিয়েছে, টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের করোনা থেকেও অন্যান গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি বেশি।

উচ্চ ওজনের ব্যাক্তিদের সাধারণত ব্লাড সুগারের সমস্যা থাকে। ফলে পরবর্তীতে ইনসুলিনের ভারসাম্য ব্যহত হয়। উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত চিনি এবং চর্বিযুক্ত খাবারগুলো রক্তের গ্লুকোজ বাড়িয়ে তোলে। যা ইনসুলিন প্রতিরোধ এবং ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা হ্রাস করতে পারে। এছাড়াও উচ্চ চিনি প্রদাহ বাড়িয়ে তেলে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।

রক্তের গ্লুকোজ, ডায়াবেটিস, প্রদাহ এবং ইমিউন সিস্টেমের মধ্যে সরাসরি যোগসূত্র রয়েছে। তাই রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণকারী খাবারগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে পারে। এছাড়া ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারগুলো শরীরে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ভূমিকা পালন করে। এবং ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাস করতে বিশেষজ্ঞের ৪ টি পরামর্শ-

আপেল:

আপেল তন্তুযুক্ত ভিটামিন সি। আপেল সাধারণত স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর নাস্তা তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়। আপেলে উদ্ভিদ-ভিত্তিক যৌগ পলিফেনল রয়েছে। যা টাইপ ২ ডায়াবেটিস এবং কার্ডিওভাসকুলার রোগ থেকে রক্ষা করে। আপেলে পাওয়া চিনি যেমন ফ্রুক্টোজ রক্তে শর্করার উপর খুব কম প্রভাব ফেলে।

প্রক্রিয়াজাত সাধারণ কার্বসের চেয়ে কমপ্লেক্স কার্বস হজম হতে বেশি সময় নেয়.png
প্রক্রিয়াজাত সাধারণ কার্বসের চেয়ে কমপ্লেক্স কার্বস হজম হতে বেশি সময় নেয়। ছবি: সংগৃহীত

গাজর:

গাজর মিষ্টি স্বাদযুক্ত হওয়া সত্ত্বেও ডায়াবেটিস রোগীরা তাদের প্রতিদিনের ডায়েটে গাজর বেছে নিতে পারে। কারণ এটি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ঠিক রাখতে সহায়তা করে। গাজর স্টার্চ জাতীয় উদ্ভিদ ফলে ডায়াবেটিস রোগীরা এটি নিশ্চিন্তে খেতে পারে।

কমপ্লেক্স কার্বস বা লো গ্লাইসেমিক ফুড:

কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট খাবারগুলোতে ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজ থাকে। যা রক্তে শর্করার উপর তাৎক্ষণিক কম প্রভাব ফেলে। ফলে প্রক্রিয়াজাত সাধারণ কার্বসের চেয়ে কমপ্লেক্স কার্বস হজম হতে বেশি সময় নেয়।

কমপ্লেক্স কার্বসের মূল উৎস আস্ত শস্যদানা যেমন ব্রাউন রাইস, আস্ত চাল, ওটমিল, বার্লি; শস্য জাতীয় খাবার কুইনো; স্টার্চযুক্ত সবজি আলু, মিষ্টি আলু, ভুট্টা, মটরশুটি, লেবু, মসুর, কিডনি বিন এবং ছোলা। এই সমস্ত খাবারগুলো ডায়াবেটিস রোগীদের ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।

আস্ত শস্যদানা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করবে.png
আস্ত শস্যদানা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করবে। ছবি: সংগৃহীত

বিশেষ যত্ন:

ডায়াবেটিস রোগীদের প্রক্রিয়াজাত মাংস এড়ানো উচিত কারণ তাতে ফ্যাট এবং লবণের পরিমাণ বেশি থাকে। দুধ এবং দুগ্ধজাত পণ্যগুলোর স্বল্প ফ্যাট বা কম চর্বিযুক্ত সংস্করণগুলো বেছে নিন। কুকি, কেক এবং চকোলেট এর মতো মিষ্টি স্ন্যাকসের পরিবর্তে তাজা ফল খান। এছাড়াও নিয়মিত শরীরচর্চা করাও গুরুত্বপূর্ণ।

ষাট বছরের বেশি বয়সী এবং গর্ভবতী মহিলাদের অতিরিক্ত যত্ন নেওয়া উচিত। স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ জীবনযাপনের জন্য সরকারী সমস্ত নির্দেশিকা অনুসরণ করুন।

তথ্যসূত্র: এনডিটিভি

এ সম্পর্কিত আরও খবর