শৈশবকাল থেকেই সর্বদা ধীরে ধীরে খেতে এবং প্রতিটি কামড়ের স্বাদ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। ধীরে খাওয়া হজমক্রিয়া ভালো রাখে, পুষ্টির শোষণ ভালো হয় এবং খাওয়ার সন্তুষ্টি সহ একাধিক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। ধীরে খাওয়ার আরো একটি কারণ রয়েছে সেটি হলো ওজন হ্রাস।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা দ্রুত খায় তাদের ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি থাকে। ধীরে ধীরে খাওয়া ব্যাক্তিদের তুলনায় দ্রুত খাওয়া ব্যাক্তিদের স্থুলত্ব হওয়ার সম্ভাবনা ১১৫ শতাংশ বেশি থাকে। প্রায় ৪,০০০ মধ্যবয়স্কদের নিয়ে করা একটি সমীক্ষা অনুসারে, যারা খাবার দ্রুত শেষ করতে ঝুঁকেন তাদের শরীরের ওজন সবচেয়ে বেশি।
ধীরে খাওয়া বিভিন্ন উপায়ে ওজন কমাতে সহায়তা করে। প্রথমত, এটি পেট ভরে গেলে ইঙ্গিত দিতে পারে যা তাড়াতাড়ি করে খাবার খেয়ে ফেললে প্রায়ই মিস হয়ে যায়। আপনি যখন খাবারটি দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করবেন তখন বেশি খাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ দ্রুত খেলে পেট পূর্ণ হয়ে গেলেও মস্তিষ্কে সংকেত পাঠানোর জন্য পর্যাপ্ত সময় পায় না।
দ্বিতীয়ত, খাবার গিলে ফেলার আগে ভালোভাবে চিবালে ক্যালোরির পরিমাণ কমাতে এবং ওজন হ্রাস করতে সহায়তা করে। বেশ কয়েকটি গবেষণার দেখা গেছে, অধিক ওজনের ব্যক্তিরা সঠিকভাবে খাবার চিবান না।
এখন অনেকের মনেই প্রশ্ন আসতে পারে, খাবার শেষ করতে কত সময় নেয়া উচিত? এই প্রশ্নটি একটু জটিল। একটি সমীক্ষা অনুসারে, প্রতিটি কামড় ৩০ সেকেন্ডের জন্য চিবিয়ে খেলে অস্বাস্থ্যকর হজমের সম্ভাবনা হ্রাস করতে পারে। তবে এতে খাদ্য গ্রহণের আনন্দও হ্রাস পেতে পারে। অবশ্যই আপনি এটি চান না। তাই অন্তত ১০-১৫ সেকেন্ড চিবিয়ে খান। সম্পূর্ণ খাবার শেষ করতে কমপক্ষে ২০ মিনিট সময় নেওয়া উচিত।
আপনি যদি দ্রুত খাদক হোন তবে সময়টি ট্র্যাক করার জন্য কয়েক দিন খাবার গ্রহণের সময়ের দিকে নজর রাখবেন। ধীরে খাওয়া শুরু করতে সহায়তা করার জন্য কিছু পরামর্শ-
ক্ষুধা সহ্য করা বেশ কঠিন। তাই সময় মতো খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন এবং মূল খাবারের মাঝে স্ন্যাক্স খেতে পারেন।
সাধারণত আপনি যতবার চিবোন তা লক্ষ্য করুন এবং ধীরে ধীরে চিবানোর সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করুন।
ডায়েটে ফাইবার যুক্ত হওয়ার বেশ কয়েকটি সুবিধা রয়েছে যেমন এটি অন্ত্রকে স্বাস্থ্যকর রাখে। তবে এই খাবারগুলো বেশি করে চিবিয়ে খেতে হবে।
প্রতিটি খাবারের আগে এক গ্লাস পানি পান করুন। এটি আপনার ক্যালোরি গ্রহণ কমাতে সহায়তা করবে।
কোনও ঝামেলা ছাড়াই শান্তভাবে খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। কোনও গ্যাজেট বা টেলিভিশন ব্যবহার করার সময় বেশি খাওয়ার প্রবণতা থাকে। তাই খাওয়ার সময় শুধুমাত্র খাবারের দিকেই মনোযোগ ধরে রাখুন।