সাধারণত তলপেটে (লোয়ার অ্যাবডোমিনাল) মেদ জমলেও, উপরের পেটেও (আপার অ্যাবডোমিনাল) মেদ জমে থাকে। পেটের মেদ কমানো বেশ কষ্টকর ও দীর্ঘমেয়াদী কাজ। তবে তুলনামূলকভাবে উপরের পেট থেকে, তলপেটের মেদ কমানো বেশ সহজ।
উপরের পেটে মেদ জমার মূল কারণ হলো অস্বাস্থ্যকর জীবনব্যবস্থা। এর সঙ্গে জেনেটিক ও হরমোনাল সমস্যাও দেখা দেয় কিছু ক্ষেত্রে। যে কারণে সকলের পরিষ্কার ধারণা থাকা প্রয়োজন, কোন কাজগুলো অলক্ষ্যে বাড়িয়ে দিচ্ছে উপরের পেটের মেদ।
ডাবল চীজ বীফ বার্গার, ফ্রেন্স ফ্রাইস, চিকেন নাগেটস কিংবা চকলেট ব্রাউনি সামনে পেলে লোভ সংবরণ করা আসলেও বেশ কষ্টকর। বিশেষ করে খাদ্যপ্রেমীদের কাছে এই খাবারগুলোই যেন ভালোবাসার অন্য নাম। কিন্তু এই ‘অস্বাস্থ্যকর’ খাবারগুলো সাময়িক ভালো লাগা ও আনন্দের বিপরিতে আপনাকে দিচ্ছে দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা- উপরের পেটের মেদ। একদিন কিংবা একমাসে এই সমস্যা ও শারীরিক পরিবর্তনটা ধরা না পড়লেও, যখন ধরা পরে ততদিন অনেক দেরি হয়ে যায়। এই সকল প্রসেসড খাবার শরীরের মেটাবলিজমের মাত্রাকে কমিয়ে দেয় বলে, মুটিয়ে যাবার সমস্যাও প্রকট হতে থাকে।
খুব স্বাভাবিকভাবে একেবারেই কোন শরীরচর্চা না করার ফলে পেটে মেদ জমবে অবধারিত ভাবেই। নিজেকে সুস্থ রাখার জন্যেও নিয়মিত শরীরচর্চা করা জরুরি। অন্যদিকে ভুল শরীরচর্চার ফলে উপরের পেটে জমতে থাকে মেদ অথবা, জমে থাকা মেদ কমতে চায় না। অনেকেই ভাবেন পেটের মেদ কমানোর জন্য কার্ডিও ফলো করাই যথেষ্ট। কিন্তু পরিমিত কার্ডিওর পাশাপাশি উপরের পেটের মেদ কমাতে ইয়োগা ও দৌড়ানো প্রয়োজন।
অফিসের মিটিং, ডেডলাইন, এসাইনমেন্ট, প্রতি মাসের বিল, সাংসারিক খরচ, ট্রাফিক জ্যাম, হিসেবে ঝামেলা, পারিবারিক দুশ্চিন্তা- সকল কিছু মিলিয়ে ঝাড়া হাত-পা থাকা সম্ভব হয় না। এই সকল বিষয় কোন না কোনভাবে প্রভাব ফেলে মনের উপর। যার ফলে দেখা দেয় মানসিক চাপ বা স্ট্রেস। এই মেন্টাল স্ট্রেস শরীরে কর্টিসলের নিঃসরণের মাত্রা বৃদ্ধি করে। যা শরীরে অতিরিক্ত ভিসেরাল ফ্যাট জমায়। যা পরবর্তিতে পেটের মেদ হিসেবে দেখা দেয়।
নিয়মিত আট ঘণ্টা ঘুমানো হচ্ছে তো? যদি ঘুম কম হয়ে থাকে এবং উপরের পেটে মেদ দেখা দেয় তবে বুঝে নিতে হবে এর মাঝে যোগসূত্র রয়েছে। বেশ কয়েকটি গবেষণা থেকে দেখা গেছে দৈনিক আট ঘন্টার কম ঘুমানোর ফলে শরীরে প্রবল অবসাদ ও ক্লান্তিভাব দেখা দেয়। একইসাথে ওজন বেড়ে যায় এবং পেটে চর্বি জমা শুরু করে। অন্যদিকে নিয়ম মেনে আট ঘণ্টা ঘুমানোর ফলে ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয় এবং পেটে মেদ জমার সমস্যাও তুলনামূলক কম দেখা দেয়।
বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শরীর ও শারীরিক কার্যকারিতায় অসংখ্য পরিবর্তন দেখা দিতে শুরু করে। প্রথমে বলতে হয়, বয়স যত বাড়তে থাকে, কমতে থাকে মেটাবলিজমের মাত্রা। ফলে ভিসেরাল ফ্যাট ও সাবকিটোনিয়াস ফ্যাট বৃদ্ধি পেতে থাকে । যে কারণে বয়সের সঙ্গে শারীরিক সমস্যা, অসুস্থতা ও পেটে মেদ জমার সমস্যা দেখা দেয়।