টিকার চেয়েও কী সংক্রমণে সৃষ্ট অ্যান্টিবডি বেশি কার্যকর?

স্বাস্থ্য, লাইফস্টাইল

লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা ২৪.কম | 2023-08-24 03:36:43

মহামারি করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে ঘুরেফিরে শোনা যাচ্ছে একটি শব্দ ‘অ্যান্টিবডি’। এটি চিকিৎসার পরিভাষা। সহজে বললে এর অর্থ দাঁড়ায়—শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হওয়া।

সাধারণত দুইভাবে মানবশরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে। প্রথমত—ওই রোগে আক্রান্ত হয়ে সেরে উঠলে। আর দ্বিতীয় প্রক্রিয়াটা হলো ওই রোগ প্রতিষেধক টিকা গ্রহণ করলে।

করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রেও বিষয়টি একই। কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়ে সেরে উঠলে, তার দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। আবার প্রতিষেধক টিকা নিয়েও অ্যান্টিবডি তৈরি হয়।

দুই প্রক্রিয়ায় তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডির মধ্যে স্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে। ফলে কোনটিতে বেশি শক্তিশালী অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, তা নিয়ে বিভিন্ন মতামত দিচ্ছেন গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা।

অ্যান্টিবডি সম্পর্কে স্পষ্ট জেনে নেয়া যাক—

অ্যান্টিবডি কী?

অ্যান্টিবডি একটি বিশেষ ধরনের প্রোটিনের কোষ, যা সংক্রমণকারী জীবাণুটিকে প্রতিহত করতে পারে। শুধু তাই নয়, নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত এই বিশেষ প্রোটিন কোষে ধরাও থাকে জীবাণুটির বৈশিষ্ট্যের স্মৃতি। ফলে সেই সময়ের মধ্যে জীবাণুটি ফের আক্রমণ করলে অ্যান্টিবডি তাকে আবারও প্রতিহত করতে পারে।

সংক্রমণ থেকে অ্যান্টিবডি

কোনো জীবাণু শরীরে ঢুকলে তার প্যাথোজেনের সঙ্গে লড়াই করতে শরীর প্রথমে ইমিউনোগ্লোবিউলিন এম বা ‘আইজিএম’ তৈরি করে। এরা যুদ্ধের প্রথম সারির সৈনিক। এর পরের ধাপে শরীর ইমিউনোগ্লোবিউলিন জি বা ‘আইজিজি’ নামের অ্যান্টিবডি তৈরি করে। এই দ্বিতীয় পর্যায়ের অ্যান্টিবডির মধ্যে ধরা থাকে ওই বিশেষ জীবাণুটির স্মৃতি।

টিকা থেকে অ্যান্টিবডি

এক্ষেত্রে সংক্রমণকারী জীবাণুটির গঠনের একটি বা দু’টি প্রোটিন শরীরে আলাদা করে প্রবেশ করিয়ে দেয়া হয়। শরীর সেগুলির বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি করে নেয়।

দুই অ্যান্টিবডির পার্থক্য কী?

সংক্রমণের ফলে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডির স্থায়িত্ব কিছুটা বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। শরীর প্রাথমিক পর্যায়ে যে অ্যান্টিবডি তৈরি করে, তা জীবাণুটির গঠন সম্পর্কে পুরো নিশ্চিত থাকে না। ফলে একটি জীবাণুর কারণে বহু ধরনের গঠনের কথা মাথায় রেখে প্রাথমিক অ্যান্টিবডি-টি বানিয়ে নেয় সে। কিন্তু টিকার অ্যান্টিবডি নির্দিষ্ট জীবাণুর নির্দিষ্ট গঠনকে প্রতিহত করার জন্যই।

কোন অ্যান্টিবডি বেশি শক্তিশালী

বিজ্ঞানীরা বলছেন, দু’টি অ্যান্টিবডি দু’রকমের হয়ে থাকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেখা গেছে, সংক্রমণের ফলে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি বেশি কার্যকরী। জীবাণুর রূপান্তরের ফলে টিকার কর্মক্ষমতা কমেছে। আবার কোনো ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, টিকাই বেশি কাজের।

চিকিৎসকদের পরামর্শ

করোনার মতো প্রাণঘাতী ভাইরাসজনিত রোগকে প্রতিরোধের একটাই রাস্তা—টিকা নেয়া। যাদের সংক্রমণের ফলে শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে, তারা যদি পরে টিকা নেন, তা হলে আরও ভালো ফল পাবেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর