মা, বোন, স্ত্রী কিংবা প্রেমিকা— যে নামেই ডাকা হোক না কেন তাতে থাকে মায়া, মমতা আর ভালোবাসার যোগসূত্র। পরিবার কিংবা কাছের মানুষটির জন্য সর্বস্ব দিয়ে ভালো রাখার চেষ্টার ত্রুটি থাকে না তাদের। কিন্তু নিজের বেলায়? নিজের যত্নের বরাবরই বড্ড আনাড়ি এই মানুষগুলো।
সাধারণত বয়স তিরিশ ছুঁই ছুঁই কিংবা ৩০ পেরোলে নারীদের শরীরে নানা রকম পরিবর্তন দেখা দেয়। শুরু হয় বিভিন্ন রকমের সমস্যা। তাই এখনই সময় আগেভাগে জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার। জেনে নিন তিরিশ পেরোলে কী কী টেস্ট করা জরুরি—
প্যাপ স্মিয়ার টেস্ট
নারীদের ৬৫ বছর বয়স অব্দি নিময়িত ‘প্যাপ স্মিয়ার’ এর মাধ্যমে জরায়ু পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত। কারণ নারীদের মধ্যে যেসব ক্যান্সারের ঝুঁকি দিনে দিনে বাড়ছে তার মধ্যে অন্যতম হলো সার্ভিক্যাল ক্যান্সার। আর সার্ভিক্যাল ক্যান্সার রোধেই করা হয় প্যাপ স্মিয়ার পরীক্ষাটি। এই পরীক্ষা সার্ভিকাল ক্যান্সারের ঝুঁকি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। তিরিশ বছরের ঊর্ধ্বে মহিলারা এই পরীক্ষা শুরু করতে পারেন কিন্তু চল্লিশ পেরোলে এই পরীক্ষা দুই-তিন বছরে একবার করা খুবই আবশ্যক।
ম্যামোগ্রাম
স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করার জন্য সবচেয়ে ভালো উপায় হলো একটি সহজ ম্যামোগ্রাম পরীক্ষা। যাঁদের শরীরের ব্রাকা ১ এবং ব্রাকা ২ মিউটেশন রয়েছে তাঁদের স্তনের ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। তাই ৩০ বছরের পর থেকেই প্রত্যেক বছর একবার করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ম্যামোগ্রাম পরীক্ষা এবং স্তনের এমআরআই স্ক্যান করিয়ে নেওয়া উচিত। যদি পরিবারে ক্যান্সারের ইতিহাস থেকে থাকে তবে এই পরীক্ষা করে নেয়া অতি আবশ্যক।
গর্ভধারণের জন্য পরীক্ষা
৩০ বছর বয়সের পর মেয়েদের শরীরে ডিম্বাণু উৎপাদনের ক্ষমতা একটু একটু করে কমতে থাকে। তিরিশের শেষের দিকে গিয়ে তা অনেকটাই কমে যায়। আর বেশি বয়সে মা হতে চাইলে একজন স্ত্রীরোগ চিকিৎসকের পরামর্শে সন্তানধারণের ক্ষমতা কতটা আছে তা যাচাই করে নিন।
ওভারিয়ান ক্যান্সার
নারীদের মধ্যে ওভারিয়ান ক্যান্সার বেশিরভাগই মেনোপজের পরে দেখা যায়। তাই ওভারিয়ান ক্যান্সারের ঝুঁকি এড়াতে ঋতুজরার আগেই মহিলাদের নির্দিষ্ট পরীক্ষা করিয়ে নেয়া উচিত।
থাইরয়েডে সক্রিয়তা
বর্তমান সময়ে যে স্বাস্থ্য সমস্যাটি আজকের নারী বেশি মোকাবেলা করে থাকেন তা হলো থাইরয়েড সমস্যা। কিছু মহিলা হাইপোথ্যারয়ডিজমে ভোগেন আবার কিছু মহিলা হাইপারথ্যারয়ডিজমে। পা ফোলা, হাত-পা ও জয়েন্টগুলোতে ব্যথা থাইরয়েড সমস্যার সাধারণ উপসর্গ। অনেকের মধ্যে অ্যানিমিয়া এবং থাইরয়েডের মতো অসুখের কোনও রকম উপসর্গ দেখা যায় না। এছাড়া অতিরিক্ত ওজন থাকলেও হাইরয়েডের পরীক্ষা করিয়ে নেয়া উচিত আগেভাগেই।
লিপিড প্রোফাইল
সুস্থ জীবন থাকতে স্বাস্থ্যকর খাওয়া-দাওয়া এবং শরীরচর্চা করা প্রয়োজন। সব ঠিক আছে কি না দেখার জন্য বয়স তিরিশ হলেই লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত।