হরমোন ও ভিটামিন-ডি এর উৎপাদন ও খাদ্য পরিপাকের জন্য কোলেস্টেরল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এমনকি শরীরের কোষের জন্য এবং সেল মেমব্রেন্সের শক্তি ও ফ্লেক্সিবিলিটি নিশ্চিত করতে প্রয়োজন হয় কোলেস্টেরলের।
অথচ শরীরের জন্য এতো প্রয়োজনীয় কোলেস্টেরলই একটা সময় শারীরিক অসুস্থতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কোলেস্টেরল হয় দুই প্রকার- খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) ও ভালো কোলেস্টেরল (HDL)। রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে গেলেই দেখা দেয় নানান ধরণের শারীরিক সমস্যা ও জটিলতা। অবস্থা গুরুত্বর হয়ে উঠলে দেখা দেয় হৃদরোগের প্রকোপ।
গবেষণা থেকে দেখা গেছে বিশ্বের দুই-তৃতিয়াংশ মানুষ উচ্চ কোলেস্টেরলজনিত সমস্যায় ভুক্তভোগী। রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে দেওয়ার মতো কিছু খাদ্য উপাদান সীমিত পরিমাণে খেলে অথবা সেই খাদ্যগুলো এড়িয়ে চললেই, কোলেস্টেরলের বৃদ্ধি এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব। জেনে রাখুন এমন কয়েকটি খাবারের নাম।
গরুর মাংস কিংবা খাসির মাংস যাদের ভীষণ প্রিয়, দুঃসংবাদটি তাদের জন্য। এই দুই ধরণের মাংসে থাকে উচ্চমাত্রার স্যাচুরেটেড ফ্যাট। যা রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) এর মাত্রা অনেক বেশি বাড়িয়ে দেয়। এছাড়া প্রসেসড রেড মিট তথা সসেজে উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরলের পাশপাশি উচ্চমাত্রার সোডিয়ামও থাকে। যা রক্তচাপ বৃদ্ধির জন্য দায়ী।
অবশ্যই শরীরের জন্য স্যাচুরেটেড ফ্যাটের প্রয়োজন আছে। তবে এই স্যাচুরেটেড ফ্যাট গ্রহণ করতে হবে তৈলাক্ত মাছ ও মুরগীর মাংস থেকে।
মাখনে প্রচুর পরিমাণ উচ্চমাত্রার স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকার ফলে, মাখন গ্রহণের পরবর্তী সময়ে রক্তে কোলেস্টেরলে মাত্রা অনেক বেড়ে যায়। তাই মাখনের পরিবর্তে আনসল্টেড আমন্ড বাটার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এছাড়া কোন রান্নায় মাখনের ঘ্রাণ আনতে চাইলে তেল ও মাখন অর্ধেক করে ব্যবহার করতে হবে।
পাস্তা ভর্তি থাকে খারাপ কোলেস্টেরল বৃদ্ধির উপাদান। বিশেষ করে চিজি পাস্তা। এতে মাখন, রিফাইন্ড ময়দায় তৈরি পাস্তা নুডলস, চিজ ও চিনি থাকে প্রচুর পরিমাণে। ফলে পাস্তা খাওয়ার ফলে খুব দ্রুত রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। যা স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে দেয় সহজেই।
বিভিন্ন ধরণের কনফেকশনারির মাফিন, কেক, কাপকেক, কুকিজ ও অন্যান্য মিষ্টি খাবার তৈরি করা হয় পর্যাপ্ত মাখন, চিনি ও রিফাইন্ড ময়দা দিয়ে। এই প্রতিটি উপাদানই ভীষণ অস্বাস্থ্যকর ও রক্তে কোলেস্টেরল বৃদ্ধির জন্য দায়ী। এছাড়া বেশিরভাগ বেকড খাবারে থাকে ট্রান্স ফ্যাট, যা হৃদরোগের সম্ভবনা বাড়িয়ে দেয় অনেক বেশি।
আরো পড়ুন: খাদ্যাভাসে রক্তচাপ থাকবে নিয়ন্ত্রণে
আরো পড়ুন: কেন খাবেন কাঠবাদাম?