শীত আসলেই অনেকের গোসল করা অনিয়মিত হয়ে যায়। সারা দিনের সবচেয়ে কঠিন কাজ হচ্ছে দুইটি। এক, ঘুম থেকে উঠে বিছানা ছাড়া। দুই, গোসল করা। গোসল যদি করতে হয়, তবে গরম পানিতে করবেন, এই ভেবে অনেকেই মারাত্মক ক্ষতি করেন।
শীতকালে সাধারণত আবহাওয়ায় শুষ্ক থাকে। তাই ত্বকের বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হয়। এই সময় বাতাসে আদ্রতার পরিমাণ খুব কম থাকায় আমাদের ত্বকও শুষ্ক হয়ে যায়। শীতকালে বাতাসের অরিরিক্ত শুষ্কতার প্রভাবে আমাদের ত্বক খুবই রুক্ষ্ম, শুষ্ক আর নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে।
এ অবস্থায় খুব গরম পানিতে গোসল করা কিন্তু শরীরের পক্ষে মোটেও ভালো না। এতে ত্বকের ফলিকলগুলো নষ্ট হয়ে যায়। গোসলের সময় মাথায় অতিরিক্ত গরম পানির ব্যবহার, চুলকে যেমনি ক্ষতিগ্রস্ত করে তেমনি মস্তিস্কের ওপরেও চাপ সৃষ্টি করে। সেই কারণে আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত মাথায় ঠান্ডা পানি ব্যবহার করা।
যাদের হার্টের সমস্যা রয়েছে, গরম পানির ব্যবহার তাদের কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমের ওপর প্রভাব ফেলে।
অতিরিক্ত গরম পানি ব্যবহার করলে মুখে ব্রণ হয়। অ্যাসিডিটি-র সমস্যাতেও চিকিৎসকেরা পুরোপুরি গরম পানিতে গোসল করতে বারণ করে থাকেন। এছাড়া মানসিক বিষণ্ণতাতেও গরম পানিতে গোসল করার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
আবার অতিরিক্ত ঠান্ডা পানিতে গোসল, আপনার শরীরের তাপমাত্রা কমিয়ে দেয়। এতে দেহের সূক্ষ্ম টিস্যুগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নার্ভের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যাদের বাতের ব্যথার প্রবণতা আছে তাদের জন্য ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করা একেবারেই চলবে না। টনসিল, সর্দি, কাশি প্রভৃতি বিভিন্ন শারীরিক উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এছাড়াও ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় এই অভ্যাস।
শীতকালে তাহলে কী করবেন?
শীতকালে আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত ঈষদুষ্ণ পানিতে গোসল করা। বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরের পেশির রিল্যাক্সেশনের জন্য এর থেকে ভালো উপায় আর নেই। এতে শরীরের রক্ত চলাচলের বৃদ্ধি ঘটে ও অনিদ্রাজনিত সমস্যা দূর হয়। সর্দি, কাশি বা টনসিলের উপশম ঘটে। শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় থাকে।